করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কর্মক্ষেত্রে প্রয়োজনে ৫০ শতাংশ কর্মী বা ব্যাংকগুলোর জনবলের অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের মাধ্যমে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগামী দুই সপ্তাহ এ নির্দেশনা পরিপালন করতে বলা হয়েছে। বুধবার (৩১ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংক করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে ব্যাংকের করণীয় বিষয়ে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই নির্দেশনা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ১৮ দফার মধ্যে প্রজ্ঞাপনে (ক), (চ), (ড), (ণ) এবং (দ) যথাযথভাবে পরিপালন করতে হবে। পাশাপাশি ‘ঢ’ ক্রমিকে বর্ণিত সিদ্ধান্ত পরিপালনের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ এর বিদ্যমান পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করে জনবলের অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের মাধ্যমে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
অর্থাৎ জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস/প্রতিষ্ঠান শিল্প কারখানাগুলো ৫০ ভাগ জনবল দিয়ে পরিচালনা করতে হবে। গর্ভবতী, অসুস্থ, ৫৫ বছরের বেশি বয়সী কর্মকর্তা/কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থা নিতে হবে। সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা যথাসম্ভব অনলাইনে আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।
কিন্তু অর্ধেক জনশক্তি দিয়ে ব্যাংকের স্বাভাবিক কাজকর্ম চলা সম্ভব নয় বলে মনে করেন ব্যাংকাররা। সরকারের নির্দেশনা মানতে শুরু করতে পারেনি অনেকেই। নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি খোদ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ও।
গত বছর লকডাউন ও সরকারী অফিস বন্ধ চলাকালীন সময়েও সীমিত সময়ে জন্য ব্যাংকিং কর্যক্রম চালু ছিল। তখনো ব্যাংকে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানে করোনা বৃদ্ধি পেলেও ব্যবসা বাণিজ্য সহ সব ধরনের কার্যক্রম স্বাভাবিকবাবে চলছে। ফলে হঠাৎ করেই ব্যাংকিং সেবায় জনশক্তি ৫০ শতাংশ হ্রাস করা হলে গ্রাহকদের চাপ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। এমনকি সময়মত ও কাঙ্খিত সেবা দেয়া সম্ভব না হলে ব্যাংক-গ্রাহকের মধ্যে সম্পর্ক অবনতিও ঘটার আশংকা করা হচ্ছে।
এ অস্থায় রোস্টার করে অর্থাৎ ব্যাংকের অর্ধেক কর্মকর্তা বাসায় থেকে বাকী অর্ধেক কর্মকর্তা অফিসে এসে কাজ করতে পারেন। প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বাসায় থেকে অনলাইনে অফিস করতে পারেন। কিন্তু শাখার কর্মকর্তদেরকে গ্রাহকের সাথে সরাসরি কাজ করতে হয়। সে সাথে অনেক ফাইল, ভাউচার সহি স্বাক্ষর করতে হয়। তাই শাখায় নিয়োজিত কর্মকর্তাদের পক্ষে বাসায় থেকে কাজ করা সম্ভব হবে না।
এ প্রসঙ্গে ব্যাংকের এমডিদের সংগঠন এবিবি'র সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, কিছু ব্যাংক ইতোমধ্যেই রোস্টার করে ডিউটি করছে। তবে আগামী রবিবার থেকে সব ব্যাংকের অর্ধেক কর্মকর্তা হোম অফিসের সুযোগ পাবেন।
এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ ও অবস্থানকালীন সময় বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে গত ২৯ মার্চ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার নতুন করে ১৮ দফা নির্দেশনা দেয়। এর মধ্যে ছয়টি নির্দেশনা পরিপালন করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ফলে বিদ্যমান পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করে জনবলের অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের মাধ্যমে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
গর্ভবতী, অসুস্থ, ৫৫ বছরের বেশি বয়সী কর্মকর্তা/কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থা নিতে হবে। সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা যথাসম্ভব অনলাইনে আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে।কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।
ব্যাংকগুলো যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন ও সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করে ব্যাংকিং সেবা নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে সক্ষম হবে বলে আমরা আমা করি।