বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে নতুন পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস ২০২২ বা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা শীর্ষক এক প্রতিবেদনে তারা বলেছে, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। আর পরবর্তী অর্থবছর অর্থাৎ ২০২২-২৩-এ প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ।
https://www.facebook.com/groups/198691124897802
এর আগে গত বছরের জুন মাসে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে যে পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্ব ব্যাংক, জানুয়ারি মাসে সেটা বৃদ্ধি করেছে তারা। চলতি অর্থবছরের জন্য তারা প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বৃদ্ধি করেছে ১ দশমিক ৩ শতাংশ এবং আগামী অর্থবছরের জন্য বৃদ্ধি করেছে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।
প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বৃদ্ধির অর্থ হলো, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে বিশ্বব্যাংক আশাবাদী।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের পালে জোর হাওয়া লেগেছে, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক, তার নেতৃত্বেই রপ্তানি খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এর সঙ্গে দেশীয় চাহিদাও বেড়েছে। শ্রম আয় ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণে এটি ঘটেছে। বিশ্বব্যাংক বলছে, প্রবৃদ্ধির চালিকা শক্তি হচ্ছে দেশীয় চাহিদা বৃদ্ধি। তবে এই চাহিদা ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির বিষয়ে ইতিবাচক কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
তবে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার ২০২১-২৩ সময়ে অনেকটাই কমে আসবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ২০১০-১৯ সালে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার ছিল ৪ শতাংশ, কিন্তু ২০২১-২৩ সালে তা কমে ২ শতাংশের নিচে নেমে আসবে।
২০২১ সাল ছিল পুনরুদ্ধারের বছর। কিন্তু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার কমে যেতে পারে—২০২১ সালে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ৪ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসতে পারে। ২০২৩ সালে তা আরও কমে ৩ দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসতে পারে। ২০২০ সালের অপূর্ণ চাহিদার ভার কমে যাচ্ছে। আবার অনেক দেশ মহামারিজনিত প্রণোদনা তুলে নিচ্ছে। এসব কারণে চলতি বছর থেকে প্রবৃদ্ধির হার কমে আসবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন অমিক্রনের বাড়বাড়ন্তের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি হোঁচট খাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো বড় দেশের চাহিদা কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে উন্নয়নশীল দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর সাধারণ মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ করতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি আরও অনেক দিন থাকবে বলেই ধারণা করছে বিশ্বব্যাংক।
তবে উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বাংলাদেশ উজ্জ্বল ব্যতিক্রম হয়ে থাকবে। বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার যেখানে ২০২২ ও ২০২৩ সালে কমবে, সেখানে বাংলাদেশের বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।