অফিসে যেতে হয় আগে কিন্তু সেখান থেকে বেরোতে হয় পরে—কর্মজীবনে এই অভিযোগ করেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। বিশেষত উন্নয়নশীল বিশ্বের সবখানেই এই চিত্র সাধারণ। তবে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টিসিএস কর্মীদের সেই ভার থেকে মুক্তি দিয়েছে। এমনকি দৈনিক কাজের সময়ের পুরোনো ধারণাও বদলে ফেলতে চলেছে তারা।
রতন টাটার এই কোম্পানি চায়, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কাজের সময়সীমা যেন দিনের ২৫ শতাংশের বেশি না হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র এক-চতুর্থাংশ, অর্থাৎ দিনে ঘণ্টা ছয়েক সময় অফিসের জন্য দিতে হবে কর্মীদের। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এটা ২৫/২৫ মডেল’। ইকোনমিক টাইমস সূত্রে এই খবর পাওয়া গেছে।
মহামারি পরিস্থিতির কারণে টিসিএস কর্তৃপক্ষ আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী পাঁচ বছর মাত্র ২৫ শতাংশ কর্মী অফিসে এসে কাজ করবেন, বাকি ৭৫ শতাংশ কাজ করবেন বাড়ি থেকেই। ২০২৫ সাল পর্যন্ত ২৫ শতাংশ কর্মী দিয়েই অফিস চালানো হবে। বাকিরা বাড়ি থেকে কাজ করলেই হবে। কারণ, উৎপাদনশীলতা ১০০ শতাংশ সচল রাখতে এর বেশিসংখ্যক কর্মীকে অফিসে আনার প্রয়োজন আছে বলে মনে করে না টিসিএস।
টিসিএসের দাবি, কাজের সময়সীমা কমিয়ে আনার সিদ্ধান্তও ২৫/২৫ মডেলেরই অংশ। মঙ্গলবার টিসিএস মুখপাত্র বলেন, ‘এখন আমাদের ৫ শতাংশ সহকর্মী অফিসে বসে কাজ করছেন। চলতি বছরের শেষে আরও বেশিসংখ্যক কর্মীকে অফিসে এসে কাজ করার বিষয়ে উৎসাহিত করা হবে। তারপর আমরা ২৫/২৫ মডেল কার্যকর করব।’
অতিরিক্ত সময় অফিসে থাকার ফলে কর্মীদের মানসিক অবসাদ, স্বাস্থ্যহানি, কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলার মতো অনেক সমস্যা ঘটতে পারে বলে নানা সমীক্ষায় উঠে এসেছে। মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গে কর্মজীবনের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এতে ব্যক্তির জীবনে প্রভাব পড়ছে। সে দিকে লক্ষ রেখেই টিসিএস কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।