ঢাকা বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪
বাড়িতে বসে কাজ করলে উৎপাদনশীলতা বাড়ে
  • ব্যাংকবীমাবিডি
  • ২০২১-০৪-২৫ ১২:০৮:৫০

গত বছর বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে প্রয়োজনের খাতিরেই বিভিন্ন দেশের অফিসগুলো তাদের কর্মীদের বাড়িতে বসে কাজ করার সুযোগ দেয়। এরপর এক বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু মহামারী শেষ হয়নি। ফলে বেঁচে থাকার তাগিদে এখনো ঘরে বসেই কাজ করছেন বিশ্বের বহু কর্মী। এ ঘরে বসে কাজ করা ভালো না খারাপ, তা নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা। হয়েছে অনেক গবেষণাও। তেমনই একটি গবেষণা বলছে, ঘরে বসে কাজ করলে কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ হাজারের বেশি কর্মীর ওপর এ গবেষণা চালানো হয়। খবর ব্লুমবার্গ।

গবেষণায় দেখা গেছে, ঘরে বসে কাজ করার এই এক বছরে মার্কিন অর্থনীতিতে উৎপাদনশীলতা বেড়েছে ৫ শতাংশ। এর কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে, অফিসে যাতায়াতের জন্য যে সময়টুকু নষ্ট হয়, সেটি এখন আর হচ্ছে না। মহামারীর সময়ে দ্রুত নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করা হলে অর্থনীতিতে আরো উন্নয়ন ঘটবে বলে পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা। ফলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে।

ইনস্টিটিউটো টেকনোলজিকো অটোনমো ডি মেক্সিকোর জোস মারিয়া বারেরো, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির নিকোলাস ব্লুম ও ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর স্টিভেন জে ডেভিস এ গবেষণাকাজে নেতৃত্ব দেন।

তবে এটাও ঠিক যে সবাই বাড়িতে বসে কাজ করার পক্ষপাতী নন। গোল্ডম্যান স্যাকস গ্রুপ ইনকরপোরেশনের  প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেভিড সলোমন নতুন এ পদ্ধতির নাম দিয়েছেন ‘বিপথগামিতা’। তিনি জানান, যত দ্রুত সম্ভব তার প্রতিষ্ঠান এ পদ্ধতি থেকে সরে আসবে। নতুন যারা কাজে যোগ দিচ্ছেন, তাদের জন্য এটি সমস্যাদায়ক। কারণ তারা তো কাজের সংস্কৃতি, বিশেষ করে ওয়াল স্ট্রিটের সংস্কৃতির সঙ্গেই পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না।

বিপরীতমুখী কথা বলছেন ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গ। তিনি বলেন, ফেসবুকের মূল ভবনের বাইরে বসে বহুদূর থেকে প্রকৌশলী নিয়োগ দেয়ার কারণে অনেক নতুন প্রতিভা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। অনেক কর্মী মহামারীর পরেও অফিস থেকে দূরে বসে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। কারণ, হয়তো তারা যেখানে বাস করেন, সে এলাকার তুলনায় তিনি বেশিই উপার্জন করেন। ফলে বাড়িতে বসে কাজ করাটা তার জন্য লাভজনক হবে।

এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের অনেক প্রতিষ্ঠান ঘোষণা দিয়েছে, মহামারী শেষ হলেও তারা কর্মীদের বাড়িতে বসে কাজের সুযোগ দেবে। অনেক প্রতিষ্ঠান তো তাদের অফিসের পরিসরও কমিয়ে ফেলেছে। এইচএসবিসি হোল্ডিংস লন্ডনে তাদের সদর দপ্তরের জায়গা কমিয়েছে। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অফিসকক্ষগুলোকে গ্রাহকের সঙ্গে মিটিং করার কক্ষে পরিণত করা হয়েছে। টুইটার জানিয়েছে, তাদের কর্মীরা স্থায়ীভাবে বাড়িতে বসে কাজ করতে পারবেন।

আবার এটাও ঠিক যে স্বল্প বেতনের অনেক কাজই আসলে বাড়িতে বসে করা সম্ভব নয়। যেমন খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য তৈরি করে যেসব প্রতিষ্ঠান, তাদের পক্ষে বাড়িতে বসে কাজ করা সম্ভব হয় না; ফলে এ খাতের কর্মজীবীরা কভিড-১৯ রোগ সংক্রমণের ঝুঁকিতে থেকে যান।

তাই গবেষণায় বলা হচ্ছে, মূলত উচ্চ বেতনের ও উচ্চশিক্ষিত কর্মীরা যে কাজগুলো করেন, সেগুলোই বাড়িতে বসে বা অফিস থেকে দূরে বসে করা সম্ভব। গবেষকরা বলছেন, তাদের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, কাজের জায়গার ক্ষেত্রে এ শিথিলতার কারণে করোনা মহামারী-পরবর্তী সময়ে উৎপাদনশীলতা বাড়বে অন্তত ৫ শতাংশ। তবে এ উৎপাদনশীলতার এক-পঞ্চমাংশকেই প্রথাগত মানদণ্ডে দেখানো হবে। কারণ অফিসে যাওয়া-আসার পথে যে সময়টুকু প্রতিদিন নষ্ট হয়, সেটিকে প্রথাগত মানদণ্ডে হিসাবই করা হয় না।

ভালো ব্যাংকার হতে চাইলে ........
কর্মক্ষেত্রে বেতন বাড়ানোর উপায়
বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রীকে চাঁদে জমি কি’নে দিলেন ব্যাংকার স্বামী