জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বীমা স্মৃতি বিজড়িত ১ মার্চ-কে সরকার কর্তৃক ‘জাতীয় বীমা দিবস’ এবং দিবসটিকে “খ” শ্রেণিভুক্ত হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। বীমা শিল্পের উন্নয়ন ও বীমার গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর র্যালি, বীমা মেলা, আলোচনা সভা এবং অন্যান্য কর্মসূচীর মাধ্যমে এ দিবসটি পালন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ২০২০ সনে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ১ মার্চকে বীমা দিবস ঘোষণা এবং দিবসটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এ সংক্রান্ত পরিপত্রের ‘খ’ ক্রমিকে অন্তর্ভুক্তের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, বীমা দেশের একটি ‘সম্ভাবনাময় ও গুরুত্বপর্ণ’ আর্থিক খাত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতার পর দেশীয় বীমা শিল্প সৃষ্টি হয় এবং বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স ন্যাশনালাইজেশন অর্ডার ১৯৭২, দ্যা ইনস্যুরেন্স কো-অপারেশন অ্যাক্ট ১৯৭৩ এর মত বীমা সংশ্লিষ্ট মৌলিক আইন প্রণীত হয়।
প্রতিবছর ১ মার্চকে জাতীয় বীমা দিবস হিসেবে পালনের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিশেষ অনুরোধ করেছিল জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “প্রস্তাব ছিল ২ বা ৩ মার্চ (বীমা দিবস) করার, কিন্তু আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বলেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬০ সালের ১ মার্চ তৎকালীন আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগদান করেছিলেন। এটার সঙ্গে একটা ঐতিহাসিক দিনের সংযোগ আছে। এই দিনে (১ মার্চ) অন্য কোনো দিবস থাকলে সেটি শিফট করে দেওয়ার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে এবং তা করেও দেওয়া হয়েছে।”
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বীমা দিবসকে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত করার প্রস্তাব করলেও মন্ত্রিসভা তাতে সায় দেয়নি বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারির মত জাতীয় দিবসগুলো ‘ক’ শ্রেণির দিবস। আর কর্মসূচিভিত্তিক ও প্রচারণামূলক বিষয়গুলো ‘খ‘ শ্রেণিভুক্ত। সে কারণে বীমা দিবসকেও ‘খ’ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬০ সালের ১ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানের আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগদান করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জন্য এটা ছিল রাজনীতির বাইরে প্রথম কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা।
তাই এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১ মার্চকে বীমা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের মাধ্যমে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠায়। প্রতিবছর ১ মার্চ বীমা দিবস হিসেবে পালন করা হবে।
আইডিআরএ সূত্র জানায়, পৃথিবীর অনেক দেশেই বীমার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য একটি দিন, সপ্তাহ অথবা মাসকে বীমা সেবা দিবস, সপ্তাহ বা মাস হিসেবে পালন করা হয়। বাংলাদেশে কোনো বীমা দিবস না থাকলেও বীমা নীতি ২০১৪তে বীমা দিবস রাখার বিষয়টি স্থান পায়। পরে ২৬ জানুয়ারি আইডিআরএ যাত্রা শুরুর দিনটিকে বীমা দিবস হিসেবে ঘোষণার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
কিন্তু সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ট্রাস্ট ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, ১৯৬০ সালের ১ মার্চ বঙ্গবন্ধু তৎকালীন পাকিস্তানের আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগদান করেছিলেন। তাই এখন এই দিনটিকে জাতীয় বীমা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে সরকার।