সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে রায়হান হত্যা মামলায় গ্রেফতার সাময়িক বরখাস্ত কনস্টেবল হারুনুর রশিদকে পাঁচদিনের রিমান্ডে পেয়েছে পিবিআই।
শনিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেল চারটার দিকে সিলেটের মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম (৩য় আদালত) বিচারক শারমিন খানম নীলার আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ নিয়ে আলোচিত এই মামলায় বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির বরখাস্তকৃত দুই কনস্টেবলকে গ্রেফতারের পর পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়। গত ২১ অক্টোবর ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয় পুলিশ সদস্য টিটু চন্দ্র দাসকে।
এর আগে শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) রাতে প্রথমে পুলিশ লাইন থেকে বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্য হারুনকে গ্রেফতার করে পিবিআই। পরে বিকেল চারটার দিকে সিলেটের মূখ্য মহানগর হাকিম ৩য় আদালতের তাকে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই।
হারুন বন্দরবাজার ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। রায়হান হত্যার পর তাকেসহ চারজন পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ ঘটনায় ১২ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু আইনে এসএমপির কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি।
মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে পিবিআইতে স্থানান্তর হয়। তদন্তভার পাওয়ার পর পিবিআইর টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরের কাস্টঘর, নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করে। সর্বোপরি লাশ কবর থেকে তোলার পর পুনরায় ময়নাতদন্ত করা হয়।
নিহত রায়হানের মরদেহে ১১১ আঘাতের চিহ্ন উঠে এসেছে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে। এসব আঘাতের ৯৭টি ফোলা আঘাত ও ১৪টি ছিল গুরুতর জখমের চিহ্ন। এসব আঘাতগুলো লাঠি দ্বারাই করা হয়েছে। অসংখ্য আঘাতের কারণে হাইপোভলিউমিক শক ও নিউরোজেনিক শকে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, কিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো কর্মক্ষমতা হারানোর কারণে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় গত ২০ অক্টোবর দুপুরে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদ হত্যা মামলায় ওই ফাঁড়ির পুলিশ কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে গ্রেফতারের পর পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। রায়হানের মৃত্যুর জন্য "দায়িত্বহীনতার" দায়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে তাদের পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
এছাড়া গত ২১ অক্টোবর এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (সাময়িক বরখাস্তকৃত) উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে ফাঁড়ি হতে পালাতে সহায়তা করা ও তথ্য গোপনের অপরাধে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির টু আইসি এসআই হাসান উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।