রংপুরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক স্কুলছাত্রীকে অন্যের বাসায় ডেকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এএসআই রায়হানুল ইসলামের নামে। অভিযুক্ত এএসআইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
রোববার (২৫ অক্টোবর) সকালে মহানগর পুলিশের হারাগাছ থানাধীন ক্যাদারের পুল এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাতে বিষয়টি জানাজানি হলে ওই বাসা থেকে আলেয়া (৩৫) নামের এক ভাড়াটিয়া ও তার সহযোগী সুরভীকে আটক করা হয়।
এ সময় ভুক্তভোগী কিশোরীকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, রংপুর মহানগর পুলিশের হারাগাছ থানাধীন ময়নাকুঠি কচুটারি এলাকার নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন সম্প্রতি হারাগাছ থানা থেকে বদলি হওয়া রংপুর মহানগর ডিবি পুলিশের এএসআই রায়হানুল ইসলাম। মেয়েটির সঙ্গে পরিচয়ের সময় রায়হানুল তার ডাক নাম রাজু বলে জানান।
সম্পর্কের সূত্র ধরে রোববার সকালে ওই ছাত্রীকে ক্যাদারের পুল এলাকার শহিদুল্লাহ মিয়ার ভাড়াটিয়া আলেয়া বেগমের বাড়িতে ডেকে নেন রায়হানুল। সেখানে রায়হানুল ধর্ষণের পর তার আরও কয়েকজন পরিচিত যুবক ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন।
এ ঘটনার পর ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে কৌশলে পুলিশকে বিষয়টি জানায়। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে হারাগাছ থানা পুলিশ নির্যাতিতা ছাত্রীকে ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে তার পরিবারকে খবর দেয়।
পুলিশ ওই সময় বাড়ির ভাড়াটিয়া আলেয়া বেগমকে এবং পরে রাতে অভিযান চালিয়ে সুরুভি নামে তার এক সহযোগীকে আটক করে। পরে ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে পুলিশ সদস্য রায়হানুলসহ অজ্ঞাত কয়েকজকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা করেন।
ওই ছাত্রীর মা জানান, ডিবি পুলিশের এএসআই রায়হানুলের সঙ্গে আমার মেয়ে কথা বলত এবং মাঝেমধ্যে দেখাসাক্ষাৎ করত।
মামলার সাক্ষী ভুক্তভোগীর পাশের বাড়ির চাচা আতিয়ার রহমান জানান, মামলার আসামি ধরতে গিয়ে আমার ভাতিজির সঙ্গে পরিচয় হয় এএসআই রায়হানুলের। তারপর থেকেই তাদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। আমার ভাতিজি তার সঙ্গে কথাবার্তা বলত।
রংপুর মহানগর পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (মাহিগঞ্জ জোন) আল ইমরান বলেন, অসুস্থ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে রাতে রংপুর মেডিকেলের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন জানান, প্রাথমিক জ্ঞিাসাবাদে তাকে দুইজন ধর্ষণ করেছে বলে জানা গেছে। এরমধ্যে রাজু নামের একজন পুলিশ সদস্যের কথা জানিয়েছে মেয়েটি। ওই রাজু ডিবি পুলিশের এএসআই রায়হানুল কিনা তা নিশ্চিত হতে রায়হানুলকেও পুলিশের জিম্মায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া এ ঘটনায় দুই নারীকে আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কার্যক্রম এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। ঘটনার সঙ্গে এএসআই রায়হানুলের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।