ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাস্তব ‘অর্থনৈতিক অস্ত্র’ প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা ‘সুইফট’ থেকে রাশিয়ার কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় ব্যাংককে বিচ্ছিন্ন করতে একমত হয়েছে তারা। ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পর মস্কোর বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের অংশ হিসেবে রাশিয়ার সাতটি ব্যাংককে সুইফট থেকে বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইতালি, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও তাদের মিত্ররা। সুইফট থেকে বাদ পড়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ভিটিবি ব্যাংক, ব্যাংক অতক্রিতিয়ে, নোভিকম ব্যাংক, প্রমসিয়াজ ব্যাংক, ব্যাংক রোশিয়া, সভকম ব্যাংক এবং ভেনশেকনমব্যাংক বা ভিইবি রয়েছে। সুইফট থেকে কার্যক্রম বন্ধ করতে ব্যাংকগুলোকে দশ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, পশ্চিমা দেশগুলো একজোট হয়ে রাশিয়ার ওপর নানামুখী নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৩২টি। রাশিয়ার ব্যাংকগুলো প্রতিদিন গড়ে ৪৬ বিলিয়ন ডলার মুল্যের বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করে যার ৮০ শতাংশই সম্পাদিত হয় ডলারে।
সুইফটকে বলা হয় আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থার মেরুদণ্ড। এটি মূলত দ্রুত আর্থিক লেনদেনের বার্তা আদান-প্রদানের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক। ২০২০ সালে এ প্লাটফর্ম ব্যবহার করে প্রতিদিন ৩ কোটি ৮০ লাখ বার্তা আদান-প্রদান হয়েছে। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতি বছর কয়েক ট্রিলিয়ন অর্থ লেনদেন হয়।
সুইফট থেকে যদি কোনো দেশকে বের করে দেওয়া হয়, তাহলে দেশটির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ভয়াবহ সঙ্কটের মুখোমুখি হতে বাধ্য। এর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে ইরান। পারমাণবিক কর্মসূচি অব্যাহত রাখার কারণে ২০১২ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ইরানের একাধিক ব্যাংককে সুইফট প্লাটফর্ম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এর ফলে দেশটির তেল থেকে আয় অর্ধেকের বেশি কমে গিয়েছিল। সঙ্কুচিত হয়েছিল দেশটির মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের অন্তত ৩০ শতাংশ।
রাশিয়া তার তেল ও গ্যাস রপ্তানির জন্য সুইফট সিস্টেমের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। কারন সুইফট-এ রাশিয়ার অংশগ্রহণও ব্যাপক। দেশটির ২৯১টি আর্থিকপ্রতিষ্ঠান সুইফট-এর গড় লেনদেনের ১ দশমিক ৫ শতাংশ সম্পন্ন করে থাকে। সুইফট ব্যবহারকারী দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়ার অবস্থান ষষ্ঠ। দেশটি বছরে ৮০০ বিলিয়ন ডলারের লেনদেন সুইফটের মাধ্যমে করে থাকে। ২০২০ সালের হিসাবমতে, রাশিয়ার জিডিপির অবয়ব ছিল ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার।
সুইফট থেকে রুশ ব্যাংকগুলোকে বিচ্ছিন্ন করার প্রভাব শুধু রাশিয়ায় সীমাবদ্ধ থাকবে না। ক্ষতির মুখে পড়বে অন্য দেশও। রাশিয়ার সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপনকারী দেশসমূহও ঝুঁকিতে পড়বে। বাংলাদেশও এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে পারবে না। দেশ দুটিতে তৈরি পোশাক, পাটসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ। আবার গমসহ আরও বিভিন্ন পণ্য আমদানি হয়ে থাকে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৬৬ কোটি ৫৩ লাখ ১০ হাজার ডলার মূল্যের পণ্য রাশিয়ায় রপ্তানি করেছে টাকার অংকে প্রায় ৫ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা। এই রপ্তানির মধ্যে তৈরি পোশাক সবচেয়ে বেশি, একই সময়ে আমদানি করেছে ৪৬ কোটি ৬৭ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। এসব পণ্যের মূল্য পরিশোধ সিংহভাগই হয়েছে পেমেন্ট সিস্টেম সুইফটের মাধ্যমে।
৩৬টি দেশের সঙ্গে এখন রাশিয়ার বিমান যোগাযোগ বন্ধ। এতে পণ্য পরিবহনও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেক জাহাজকে ঘুরে যেতে হবে। ফলে কনটেইনার পরিবহন ব্যয়ও বাড়বে। এমনকি বেড়ে যাবে বিমানে পণ্য পরিবহন ব্যয়ও।
ইউক্রেনে রুশ হামলার জেরে গত বুধবার রাশিয়ায় নিজেদের পণ্য বিক্রি বন্ধ করে দেয় বিশ্বখ্যাত পোশাকের খুচরা বিক্রেতা ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএম। সেই রেশ না কাটতেই রাশিয়ায় পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে চলমান ক্রয়াদেশ স্থগিত করেছে ব্র্যান্ডটির এ দেশীয় কার্যালয়।এইচঅ্যান্ডএমের ষষ্ঠ বৃহত্তম বাজার হলো রাশিয়া। বর্তমানে ১৫০টির বেশি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে সেখানে।
রাশিয়ায় সুইফটের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার ফলে বাংলাদেশর ব্যাংকগুলো সমস্যায় পড়ছে। কারণ, বাংলাদেশ রাশিয়ার সঙ্গে আর্থিক লেনদেন সুইফটের মাধ্যমেই করে থাকে। রাশিয়ায় সুইফট বন্ধ থাকার ফলে বাংলাদেশের কোনো ব্যাংক রাশিয়ার সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করতে পারবে না। আবার রাশিয়ার ব্যাংকগুলোর পেমেন্ট বাংলাদেশ নিতে পারবে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে বাংলাদেশে নিয়মিত আমদানি হচ্ছে তুলা, গম,ভুট্টা, সরিষা, মসুর ডাল।বিশেষ করে গমের চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ আসে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। ভুট্টার ২০ শতাংশ আসে এই দু’টি দেশ থেকে। অন্যদিকে তৈরি পোশাক রপ্তানির নতুন বাজার হিসেবেও বিবেচনা করা হচ্ছে রাশিয়াকে। এ অবস্থায় সুইফট বন্ধ হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ার পাশাপাশি বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে বাংলাদেশ। পাশাপাশি বাণিজ্যের সাথে জড়িত ব্যাংকগুলোও ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ একাধিক দেশ রাশিয়ার আর্থিকখাত ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এখনও পর্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না, রাশিয়ার মোট কয়টি ব্যাংক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে।এটাও বড় ধরনের সমস্যা। কারণ বাংলাদেশ রাশিয়ার কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করলে পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়লে ক্ষতি আরো বাড়বে।
বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার আর্থিক লেনদেনের প্রধান মাধ্যম সুইফট। ফলে রাশিয়ার ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সুইফ তাদের কার্যক্রম বন্ধ করলে ব্যবসা-বাণিজ্যে বিশেষ করে আমদানিতে বড় সমস্যায় পড়বে বাংলাদেশ সে সাথে সমস্যয় পড়বে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত।রাশিয়ায় বাংলাদেশের বহু ছাত্র-ছাত্রী উচ্চ শিক্ষায় অধ্যয়নরত আছে। সুইফট বন্ধ থাকলে এসব শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন শিক্ষা খরচ বাবদ অর্থ পাঠানোও কঠিন হবে।
ব্যাংকাররা মনে করেন, রাশিয়ার সঙ্গে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে যে আর্থিক লেনদেন হয় সেটি সুইফটের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। অর্থাৎ বৈদেশিক বাণিজ্যের পেমেন্ট সুইফট ছাড়া বিকল্প কোনো মাধ্যম আপাতত নেই। বড় বড় লেনদেনগুলো সুইফট হয়েই আসে। সুইফ কার্যক্রর না থাকলে বাংলাদেশ আর রাশিয়ার সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি করতে পারবে না,এলসিও খুলতে পারবে না। এই মুহূর্তে বিকল্প কোনো মাধ্যমও নেই। ফলে ব্যাংকাররা বিষয়টিকে আনস্ন বিপদ মনে করছেন। সবমিলিয়ে গোটা বিষয়টি নিয়েই দেশের ব্যাংক খাতে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি করেছে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ।
জানা যায়, পোশাকশিল্পের মালিকরা জানান, রাশিয়ার সঙ্গে অর্থ লেনদেনে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় তাদের অনেকে আগের অর্ডার অনুযায়ী পণ্য প্রস্তুত করার পরও তা পাঠানো বন্ধ রেখেছেন। বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় রপ্তানি পণ্যের ৯৫ শতাংশই যায় তৈরি পোশাকশিল্প খাত থেকে। এ বছর রাশিয়ায় ১০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানির টার্গেট করেছিলেন পোশাকশিল্পের মালিকরা। তারা মনে করছেন, এখন তা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।
রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অন্তত এক বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাশিয়া ছাড়াও ইউরোপ-আমেরিকার বাজারে পোশাক রপ্তানির গতি কমেছে। এ পরিস্থিতিতে নতুন করে অর্ডার খুব বেশি নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মালিকরা।
এ যুদ্ধ যত বেশি সময় ধরে চলবে, ততই পোশাক রপ্তানি নিয়ে শঙ্কা দেখা দেবে। পাশাপাশি সুতাসহ কাঁচামাল এবং জাহাজসহ পণ্য পরিবহন ব্যয় বাড়বে, তাতে পোশাক খাতই বেশি শঙ্কায় পড়বে বলে মনে করছে পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ।
ছয় মাস আগে রাশিয়ার একটি বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্ডার পেয়েছিলেন বাংলাদেশের একটি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান।সেজন্য তিনি আগাম ৩০ শতাংশ পেমেন্টও নিয়েছেন। গত সপ্তাহে তার এক কনটেইনার তৈরি পোশাক পাঠানোর কথা ছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে পুরো পেমেন্ট পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ায় তিনি পণ্য পাঠাননি।
চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব এভাবেই পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশেষ করে পোশাক শিল্পে। ইতিমধ্যে দেশের অনেক পোশাক কারখানা পণ্য জাহাজীকরণ করেও তা রাশিয়ায় পাঠানো থেকে বিরত থাকছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রায়শই রাশিয়ার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সংস্থা এবং ব্যক্তিকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হচ্ছে এবং প্রতিনিয়তই এ তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। কখন কাকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হচ্ছে তা আগে থেকে অনুমান করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে রাশিয়ার কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করা যেতে পারে তা বলা যাচ্ছেনা। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্যান্য সরকারী সংস্থা রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা প্রপ্ত প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করেনি। তাই বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ী ও ব্যাংকাররা অত্যন্ত উদ্বীগ্ন। ব্যাংকগুলোর বিভিন্ন শাখার গ্রাহক রাশিয়ায় এলসি খুলতে চাইলে ব্যাংকগুলোর প্রধান কার্যালয় উক্তে এলসি খোলা উচিত হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেনা।
সাম্প্রতিক সময়গুলোতে আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলো থেকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিকাকরদের অনুকূলে প্রেরিত এলসিতে জটিল শর্তাবলী উল্লেখ করা হচ্ছে। যা রপ্তানিকারকদেরকে মালামাল রপ্তানি এবং রপ্তানি পরবর্তী অর্থ প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি করছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও সুইফটের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়া ভিইবি বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে রাশিয়ার পক্ষ থেকে অর্থায়ন করছে। এ ব্যাংকের মাধ্যমেই বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংক এ প্রকল্পের অর্থ লেনদেন করে। ব্যাংকটি কঠোর নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ায় দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতিও এখন বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ রুশ ব্যাংক ভিইবি বাংলাদেশকে তাদের সঙ্গে আপাতত লেনদেন থেকে বিরত থাকতে বলেছে । এদিকে রাষ্ট্রমালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংক ও বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংকেও রাশিয়ার ব্যাংকের কাছ থেকে এমন বার্তা এসেছে বলে জানা গেছে। ওই সব ব্যাংক তাদের সঙ্গে লেনদেন করতে নিষেধ করেছে বাংলাদেশি ব্যাংককে।
এদিকে রাশিয়ার যেসব ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সে সমস্ত ব্যাংকের সাথে লেনদেনের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে জানানো হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করার পাশাপাশি রাশিয়ার দিক থেকে লেনদেনের বিকল্প প্রস্তাব এলে তাতে সাড়া দেওয়ার কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সুইফট বন্ধ হলে রাশিয়ার সঙ্গে যেসব ব্যাংকের চুক্তি বা লেনদেন রয়েছে তাদের জন্য বেশ ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। যেসব ব্যবসায়ী রাশিয়ার সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা করেন তাদের এলসির বিল থাকলে সেগুলো দেওয়া যাবে না। এর ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়ার সম্ভাবনা আছে। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে রাশিয়ার পক্ষ থেকে সুইফট এর পরিবর্তে অন্য কোন বিকল্প পথের কথা বলা হয় কিনা এবং তা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে গ্রহণযোগ্য হয় কিনা তার উপরই দুদেশের ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক লেনদেন নির্ভর করছে।
লেখকঃ ব্যাংকার ও অর্থনীতি বিশ্লেষক
ইমেইলঃ ma_masum@yahoo.com