আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের (এআইবিএল) বরিশাল শাখা ব্যবস্থাপকসহ অন্য কর্মকর্তাদের প্রাণনাশ এবং প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়ার হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে এক গ্রাহকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় গত শনিবার একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়েছে, নগরীর কাউনিয়া প্রধান সড়কের বাসিন্দা শহীদ হোসেন তালুকদারের ছেলে মনোয়ার হোসেন তালুকদার কয়েক বছর ধরে এআইবিএল ক্যাপিটাল মার্কেট সার্ভিসেস লিমিটেডের বরিশাল শাখায় শেয়ার লেনদেনের উদ্দেশ্যে যাতায়াত করেন। তার হিসাবে লেনদেনের কারণে ল্যাজার ব্যালেন্স নেগিটিভ হলে তা সমন্বয় করার জন্য তাকে তাগাদা দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এজন্য মনোয়ার হোসেন ক্ষুব্ধ হয়ে শাখার কর্মকর্তাদের সাথে রুঢ় আচরণ করেন। এমনকি মাঝে মধ্যে ব্যাংকের শাখা কর্মকর্তাদের নিকট অন্যায় সুবিধাও দাবি করেন।

ডায়েরিতে অভিযোগ করা হয়েছে, গত ৩ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে গ্রাহক মনোয়ার হোসেন তালুকদারকে আগের নেগেটিভ ব্যালেন্স সমন্বয় করতে পুনরায় তাগাদা দিলে ক্ষুব্ধ হন তিনি। এজন্য তিনি অফিসের মধ্যে কর্মকর্তাদের মারধরের চেষ্টা করেন এবং পরে শাখা ব্যবস্থাপকসহ সবাইকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।

এ ছাড়া ব্যাংক কর্মকর্তাদের বরিশাল ত্যাগ না করলে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান এবং অফিসিয়াল কাজে বাধা সৃষ্টি করেন। পাশাপাশি ব্যাংকের অন্য গ্রাহকদের এই প্রতিষ্ঠান ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বলেন। না হলে তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেন মনোয়ার হোসেন ।

সবশেষ এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নিলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রাণে মেরে ফেলা এবং প্রতিষ্ঠানের কোনো শাখা বরিশাল শহরে থাকতে দেবেন না বলে হুমকি দেন। শুধু ঘটনার দিন নয় বরং ওই ঘটনার পরে প্রায় প্রতিদিনই মনোয়ার হোসেন ব্যাংকে এসে এমন বিশৃঙ্খলাসহ হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এসব বিষয় ব্যাংকের সিসি টিভিতে রেকর্ড আছে বলে ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়। সবশেষ গত ৩০ নভেম্বর বেলা ২টা ৫২ মিনিট এবং পরবর্তী ১ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় তিনি শাখায় প্রবেশ করে গ্রাহকদের মারধরের চেষ্টা এবং তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও লেনদেন করতে আসা গ্রাহকদের ভয়ভীতির প্রদর্শন করেন। এ কারণে ব্যাংকের ওই শাখায় লেনদেন কমে আসছে। তা ছাড়া ওই গ্রাহকের এমন কর্মকাণ্ডে আতঙ্কগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনিসহায়তা পেতে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, আমরা তাদের কাছে টাকা পাবো। কিন্তু তারা দাবি করছে তারা আমাদের কাছে টাকা পাবে। এ জন্য ব্যাংকে কাগজ আনতে গিয়েছিলাম। এটা নিয়ে একটু ঝামেলা হতে পারে। কিন্তু ব্যাংক বন্ধ করে দেয়া বা কর্মকর্তাদের হুমকি দেয়ার অভিযোগ সত্য নয়।

সাধারণ ডায়েরির বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিমুল করিম বলেন, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তাদের হুমকির ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।