দুপুরের দিকে মধ্যবয়স্ক এক ব্যক্তি ব্যাংকে সেবা নিতে যান। কাজ শেষ হলে ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের কাছে দোয়া চেয়ে ওই ব্যক্তি জানালেন, তিনি ‘করোনা পজিটিভ’, হাসপাতালে যাচ্ছেন। ঘটনাটি আজ বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা সদরের ডাকঘর সড়ক এলাকায় অবস্থিত একটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখায় ঘটে।
ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক রাত সোয়া আটটার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে করোনাসংক্রমিত ওই গ্রাহকের পরিচয় উল্লেখ না করে ঘটনাটির বর্ণনা দেন।
স্ট্যাটাসটি নজরে পড়লে এই প্রতিবেদক মুঠোফোনে ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলেন। ব্যবস্থাপক বলেন, ওই গ্রাহক এটিএম বুথে টাকা তুলতে গেলে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। পরে তাঁর চেম্বারে গিয়ে বিষয়টি জানান। এরপর গ্রাহকসহ ব্যাংকের আরেক কর্মকর্তাকে নিয়ে বুথে যান। বেশ কিছু সময় চেষ্টা চালিয়ে বিষয়টির সমাধান হয়নি। পরে ব্যাংকে গিয়ে গ্রাহকের হাতে নগদ টাকা তুলে দেন। ফেরার সময় গ্রাহক তাঁকে বললেন, ‘স্যার খাস দিলে দোয়া কইরেন, আমি করোনা পজিটিভ। হাসপাতালে ভর্তি হতে যাচ্ছি।’ এরপর ওই গ্রাহক দ্রুত বেরিয়ে চলে যান। ব্যবস্থাপক বলেন, গ্রাহকের কথা শুনে তিনি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপক বলেন, শহরের একটি ভাড়া বাসায় শুধু তিনি ও তাঁর স্ত্রী থাকেন। স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ওই গ্রাহক বলেন, সপ্তাহখানেক আগে জ্বরে আক্রান্ত হলে সিলেটের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে নমুনা পরীক্ষা করান। তবে ফলাফল পজিটিভ নয় বলে দাবি করেন। ব্যবস্থাপকের সঙ্গে আলাপচারিতার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁর কিডনিতে কিছু সমস্যা ধরা পড়েছে। তাই, সিলেটে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) প্রিয়জ্যোতি ঘোষ বলেন, গত বছর করোনার সংক্রমণ শুরুর পর থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত উপজেলার মোট ২১১ জন ব্যক্তি সংক্রমিত হয়েছেন। হোম আইসোলেশনে আছেন ৫১ জন। মারা গেছেন তিনজন। সংক্রমণ বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে তিনি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।