পাঁচটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ বেশ কিছু অভিযোগে সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী ও এস এম মুনিরুজ্জামান এবং সাবেক নির্বাহী পরিচালক (ইডি) মাহফুজুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্ত কমিটি।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের কনফারেন্স রুমে আলাদাভাবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন কমিটির প্রধান ডেপুটি গভর্নর এ কে এম সাজেদুর রহমান খান।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাবেক ডেপুটি গভর্নর সুর চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সবই মিথ্যা। তবুও আমার যা বলার ছিলো তা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটিকে বলেছি। এটা বলার পরই তিনি দ্রুত গাড়িতে উঠে চলে যান।
জানা গেছে, পিপলস লিজিং ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংসহ অন্তত পাঁচটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার)। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে লোপাটের তথ্য ধামাচাপা দিতেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন টিম। আর এসব অনিয়মে সাবেক ডেপুটি গভর্নর সুর চৌধুরী ও বর্তমান নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম সহায়তা করতেন। ঘুষের বিনিময়ে এসব অনিয়মে সহায়তা করতেন আরো বেশকিছু কর্মকর্তা।
পিকে হালদারের অন্যতম সহযোগী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাশেদুল হকের দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। গত ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সিএমএম আদালতে জবানবন্দি দেন রাশেদুল।
আদালতে জবানবন্দিতে রাশেদুল বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম চাপা দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন কর্মকর্তাদের পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা করে দিতো রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক শাহ আলমকে প্রতি মাসে দেয়া হতো দুই লাখ টাকা করে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম-দুর্নীতি ‘ম্যানেজ’ করতেন সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতি ধরতে গঠিত হয় ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং (কারণ উদ্ঘাটন) কমিটি।
কমিটিতে ডেপুটি গভর্নর এ কে এম সাজেদুর রহমান খানকে প্রধান ও বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক মো. সারোয়ার হোসেনকে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এ কে এম ফজলুর রহমান, ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক মো. কবির আহাম্মদ, ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-৪-এর মহাব্যবস্থাপক মো. নুরুল আমীন।