ঢাকা রবিবার, মে ১৯, ২০২৪
আরো বেশি উন্মুক্ত হবে চীনের মেগা অর্থনীতি: জিনপিং
  • ব্যাংকবীমাবিডি
  • ২০২০-১১-২০ ১১:১২:৩৬
.

বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য চীনের দরজা আরো বেশি উন্মুক্ত করা হবে এবং আরো বেশিসংখ্যক দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করবে বেইজিং। এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশনের (এপেক) সম্মেলন সামনে রেখে আয়োজিত এক ফোরামে গতকাল এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। খবর রয়টার্স, বিবিসি।

এপেকভুক্ত ২১ দেশের শীর্ষ নেতারা আজ ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আয়োজিত এক সম্মেলনে যুক্ত হবেন। তার আগে গতকাল আয়োজিত এক ফোরামে জিনপিং বলেন, তিনি রক্ষণশীল মনোভাব সমর্থন করেন না; বরং বিশ্বায়নের যে ধারা তৈরি হয়েছে, তা পাল্টে দেয়া সম্ভব নয় বলেই মনে করেন তিনি।

চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার মাধ্যমে অথবা নিজেদের একটি বলয় তৈরি করে অন্যদের বিচ্ছিন্ন রাখার মাধ্যমে আমরা বিশ্বায়নের ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই না। চীন সবসময়ই মুক্ত বাজার ও পারস্পরিক সহযোগিতার নীতিতে অটল থাকবে। আমরা বহুজাতিকতার নীতি অনুসরণ করব এবং পরামর্শ বিনিময়, যৌথ অংশীদারিত্ব ও পারস্পরিক স্বার্থ সংরক্ষণের মাধ্যমে অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক স্থাপন চালিয়ে যাব।’ তিনি আরো বলেন, ‘একক কর্তৃত্ববাদ ও রক্ষণশীলতার ধারণা বিশ্ব অর্থনীতিকে বহুমুখী ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’

চীনের দাবি, তাদের শত শত কোটি ডলারের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনই বাণিজ্যনীতিতে রক্ষণশীল মনোভাবের অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে।

এমন এক সময়ে এপেক শীর্ষ নেতাদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যখন নভেল করোনাভাইরাস সৃষ্ট মহামারীর কারণে বিশ্ব অর্থনীতি বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে। এ অবস্থা থেকে অর্থনীতিকে টেনে তুলতে বিশ্বনেতারা আরো বেশি উন্মুক্ত ও বহুপক্ষীয় বাণিজ্যের ওপর জোর দিয়েছেন। তারা আশা করছেন, নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে বৈশ্বিক মুক্ত বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা আরো বাড়বে।

এপেকের আজকের ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও যোগ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই নিয়ে নিজের চার বছরের মেয়াদে দ্বিতীয়বারের মতো এপেক সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। এর আগে ২০১৭ সালে এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তিনি।

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এরই মধ্যে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, তিনি হোয়াইট হাউজে আসার পর সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে যে বহুজাতিকতার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল, সেই নীতিতে আবার ফিরে যাবেন। অবশ্য বিশ্লেষকদের মনে একটি প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, আসলেই নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুগের নীতিগুলো পাল্টে দিতে সক্ষম হবেন কিনা।

সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং জানান, তিনি আশা করেন যে বাইডেন প্রশাসনের আমলে বহুজাতিকতাবাদ আবার ফিরে আসবে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, তারা (বাইডেন প্রশাসন) ডব্লিউটিও ও এপেকের প্রতি সমর্থন আরো বাড়াবে। অবশ্য তারা তাদের দরজা আরো উন্মুক্ত করবে কিনা কিংবা সিপিটিপিপিতে যোগ দেবে কিনা, সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। কারণ বিষয়টি অভ্যন্তরীণ রাজনীতির ওপরও অনেকখানি নির্ভরশীল।’

লি বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিগত সিদ্ধান্তগুলোর কারণে সাম্প্রতিক কয়েক বছরে এপেকের অগ্রগতি ব্যাহত হয়েছে। এছাড়া তারা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে উভয় দেশই লাভবান হবে—এমন নীতিতে বিশ্বাসী ছিল না। তারা কেবল নিজেদের স্বার্থের কথাই চিন্তা করেছে।’

এপেকের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন দুই বিপরীত মেরুতে অবস্থান নেয়ায় সেবারের সম্মেলনে কোনো গঠনমূলক ঐকমত্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হয় এপেক সদস্য দেশগুলো। ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র এবারের সম্মেলনে কতটা উদার মনোভাব দেখাবে, সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে হেরে গেলেও আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ট্রাম্পই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকছেন। এ কারণে এপেক সম্মেলনে তিনিই দেশটির নেতৃত্ব দেবেন।

এবারের ভার্চুয়াল এপেক সম্মেলনের আয়োজক দেশ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন জানিয়েছেন, জোটটির সদস্য দেশগুলো ‘২০২০-পরবর্তী’ লক্ষ্যমাত্রা তৈরির বিষয়ে কাজ করছে। চলমান অর্থনৈতিক অচলাবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য মুক্ত ও বহুজাতিক বাণিজ্যের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি।

ব্যাংক অব আমেরিকাকে ২২৫ মিলিয়ন ডলার জরিমানা
আজ থেকে রুশ ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ
অর্থনীতির জন্য শোক করছেন রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর