দেশের বেশিরভাগ ব্যাংক তাদের কর্মীদের বেতন ঠিকঠাক দিলেও পরিচালন ব্যয় কমাতে এখনও কর্মীদের বেতন কাটছে বেসরকারি খাতের দ্য সিটি ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক। করোনার প্রথম ধাক্কায় দেশের পাঁচটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কর্মীদের বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত নিলেও পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটতে থাকলে তা থেকে সরে আসে তিনটি ব্যাংক। তবে এখনও বেতন সমন্বয় করতে পারেনি সিটি ও এক্সিম ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দু’টি ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
জানা যায়, ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা শনাক্ত হলে সেই ধাক্কায় ওই বছরের মাঝামাঝি সময়ে এক্সিম, এবি, ওয়ান, দ্য সিটি ও আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক তাদের কর্মীদের বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তবে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে এবি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক ও আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক বিষয়টির সমাধান করলেও এখনও পুরোপুরি সমাধানে আসতে পারেনি সিটি ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক।এ কারণে মানুষ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিজের হাতে রেখেছিল। এ কারণে বেড়েছিল গিয়েছিল ব্যাংকবহির্ভূত মুদ্রার পরিমাণ বা ব্যাংক থেকে টাকা তোলার পরিমাণ। গত অর্থবছরের জুলাই-ফেব্র“য়ারি ব্যাংকবহির্ভূত মুদ্রার হার বেড়েছিল ৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে এ হার বাড়েনি, বরং কমেছে ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে গ্রাহকদের ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তোলার চাহিদা অনেক করোনা মহামারির কারণ দেখিয়ে কর্মীদের ১৬ শতাংশ বেতন কাটছে সিটি ব্যাংক। মাঝে বন্ধ রাখা হয়েছিল ইনসেনটিভ এবং বোনাসও। ব্যাংকটিতে বোনাস ও ইনসেনটিভ চালু হলেও ১৬ শতাংশ বেতন হ্রাসের কোনো সমাধান হয়নি।
অন্যদিকে এক্সিম ব্যাংক প্রথম পর্যায়ে কর্মীদের ১৫ শতাংশ বেতন কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল। সম্প্রতি ব্যাংকটি সাড়ে ৭ শতাংশ সমন্বয় করলেও এখনও সাড়ে ৭ শতাংশ কম বেতন পাচ্ছের কর্মকর্তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতিতে প্রথম বেতন কমানোর উদ্যোগ নিয়েছিল এক্সিম ব্যাংক। এরপর কর্মীদের বেতনভাতা কমানোর ঘোষণা দেয় সিটি ব্যাংক ও এবি ব্যাংকও। এই ধারায় যুক্ত হয় ওয়ান ব্যাংক। সবশেষ বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক। আরও কয়েকটি ব্যাংক নীরবে কর্মীদের বেতন কমিয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।
ভুক্তভোগী ব্যাংক কর্মীরা বলছেন, ব্যাংকের প্রাণ হলেন কর্মকর্তারা। পরিচালন ব্যয় কমানোর অজুহাতে বেতনে হাত দেয়া উচিত নয়। এমনটা হলে ব্যাংকারদের মনোবল হারিয়ে যায়। ব্যাংকের সার্বিক অগ্রগতি ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা সৃষ্টি হয়। তাছাড়া, ব্যাংকে প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা আয় করলেও বেতন কমানোর বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য।কমেছে। এসব মিলে ব্যাংকে টাকা পড়ে আছে। কিন্তু সেগুলোর ব্যবহার বাড়েনি।
বেতন কমানোর বিষয়ে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়ার সঙ্গে কথা বলতে তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তা রিসিভ হয়নি।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাশরুর আরেফিন বলেন, ‘করোনায় যখন ব্যবসা পড়ে যায়, তখন কর্মীদের বেতন ১৬ শতাংশ কমিয়েছি। এটা এক বছরের মধ্যেই বৃদ্ধি করে দেব, এজন্য তো কমানো হয়নি। বলা ছিল ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রমোশন, বোনাস, ইনক্রিমেন্ট কোনোটিই হবে না। তবে ব্যবসা ভালো হওয়ায় সম্প্রতি বোনাস-ইনক্রিমেন্ট দিয়েছি।’