অগ্রণী ব্যাংকের মুন্সীগঞ্জ শাখায় খোলা সঞ্চয়ী হিসাবে টাকা গচ্ছিত রেখে মারা যাওয়া পাবলু মোল্লার উত্তরাধিকারীরা পাবেন বলে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে নমিনির করা আবেদন (লিভ টু আপিল) গ্রহণ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আবেদনটি গ্রহণ করে আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
তিনি জানান, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকে জমা রাখা মৃত ব্যক্তির টাকা নমিনি নন, উত্তরাধিকারীরা পাবেন বলে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে নমিনির করা এ সংক্রান্ত এক আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ রায়টি দিয়েছিলেন।
মামলার বিবরণীতে দেখা যায়, মুন্সীগঞ্জ সদরের বৈধড় গ্রামের অধিবাসী পাবলু মোল্লা অগ্রণী ব্যাংক মুন্সীগঞ্জ শাখায় সঞ্চয়ী হিসাবে ২০০৮ সালের ১০ জুলাই পর্যন্ত ৫,২৫,৬৭৮/- টাকা জমা রেখে মারা যান। এরপর ওই টাকার উত্তরাধিকারী দাবি করে মুন্সীগঞ্জ আদালতে আবেদন নিয়ে যান পাবলু মোল্লার স্ত্রী আরফিন নাহার পুতুল (২২)। আদালতে ওই বছরের ১৬ অক্টোবর সেই হিসাবের তথ্যবিবরণী তার স্ত্রী আরফিন নাহার পুতুল হলফনামা আকারে আদালতে জমা দেন। যেখানে ওই টাকার তথ্য উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ওই সঞ্চয়ী হিসাবে নমিনি ছিলেন পাবলু মোল্লার বাবা খলিল মোল্লা ও পাবলুর ভাই। নমিনিরা আদালতে গিয়ে বলেন, আরফিন নাহার স্ত্রী উত্তরাধিকারী দাবি করতে পারেন না, কারণ পাবলু মোল্লার ব্যাংক হিসাবে তাদের (বাবা ও ভাই) নমিনি করা হয়েছে। শুনানি শেষে ওই মৃত ব্যক্তির ব্যাংকে গচ্ছিত থাকা টাকা নমিনি নন, উত্তরাধিকারীরা পাবেন বলে রায় ঘোষণা করেন মুন্সীগঞ্জের যুগ্ম জেলা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ।
আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত জানান, ব্যাংক কমিশন অ্যাক্ট-১৯৯১ সালের আইনের (১০৩) ধারা অনুযায়ী ব্যাংকের টাকা নমিনিকে দেয়ার নিয়ম থাকলেও বিচারিক আদালতের রায়ে বলা হয়েছে নমিনি নন, উত্তরাধিকারীকে দিতে হবে ওই গচ্ছিত টাকা। তাই বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করা হয় হাইকোর্টে। ওই আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্টও মৃত ব্যক্তির ব্যাংকে থাকা টাকা নমিনি নন, উত্তরাধিকারীরা পাবেন বলে বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন। এরপর নমিনি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল গ্রহণ করা হয়েছে। সেটি এখন আপিল বিভাগে শুনানি হবে।