দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদের জন্য এম আশিক রহমানকে সম্মতি দেয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
এম আশিক রহমান সিটি ব্যাংকের চিফ কান্ট্রি কমপ্লায়েন্স অফিসার (সিসিসিও) ও চিফ অ্যান্টি মানি লন্ডারিং অফিসার (সিএএমএলও)। ডিএসইর এমডি পদে তাকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য বিএসইসির কাছে অনুমতি চেয়েছিল ডিএসই।
মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) তাকে নিয়োগের ব্যাপারে অসম্মতি জানিয়ে ডিএসইকে চিঠি পাঠিয়েছে বিএসইসি।
ডিএসইর এমডি হিসেবে এম আশিক রহমানকে অসম্মতি জানানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি বলেন, এ বিষয়ে ডিএসইকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ডিএসই সূত্র জানায়, এমডি পদে আবেদন করা প্রার্থীদের মধ্যে এম আশিক রহমানের চেয়ে অধিকতর যোগ্য প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ তাকেই বেছে নিয়েছিল। এমনকি এনআরসি বাছাই করা সর্বশেষ দুই প্রার্থীর বিষয়ে ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী চীনের শেনজেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষে মনোনীত পরিচালক মি. শাই ওয়েনহাই এ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তবে তাকে উপেক্ষা করেই এম আশিক রহমানকে বাছাই করলেছিল ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ।
এদিকে ডিএসইর এমডি পদে আশিক রহমানের যোগ্যতা নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন তুলেছেন বিনিয়োগকারীসহ বাজার সংশ্লিষ্টরা। অনেকেই মনে করছেন আশিক রহমানের ডিএসইর নেতৃত্ব দেওয়ার মতো যোগ্যতা নেই। মূলত টিম পরিচালনা ও সরাসরি শেয়ারবাজার নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকায় তার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উল্লেখ্য,দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে সিটি ব্যাংক এনএর চিফ কান্ট্রি কমপ্লায়েন্স অফিসার (সিসিসিও) ও চিফ অ্যান্টি মানি লন্ডারিং অফিসার (সিএএমএলও) এম আশিক রহমানকেই নির্বাচিত করে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ। ডিএসইর নমিনেশন অ্যান্ড রিমুনারেশন কমিটির (এনআরসি) সুপারিশের ভিত্তিতে গতকাল এ সিদ্ধান্ত নেয় পর্ষদ। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকে অনুমোদন পেলেই তাকে চূড়ান্তভাবে এ পদে নিয়োগ দেয়ার কথা।
জানা গেছে, এমডি পদে আবেদন করা প্রার্থীদের মধ্যে তার চেয়ে অধিকতর যোগ্য প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও তাকেই বেছে নিয়েছে পর্ষদ। এমনকি এনআরসি বাছাই করা সর্বশেষ দুই প্রার্থীর বিষয়ে এক্সচেঞ্জটির কৌশলগত বিনিয়োগকারী চীনের শেনজেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকেও তাদের যোগ্যতার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাদের পরামর্শ ছিল বহিরাগত প্রার্থীর চেয়ে ডিএসইর মধ্যেই অধিক যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী রয়েছে। তবে এসব পরামর্শ উপেক্ষা করেই এম আশিক রহমানকে বাছাই করল ডিএসইর পর্ষদ।
ডিএসইর এমডির যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার বিষয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ব্যবসা, অর্থনীতি, পরিসংখ্যান, গণিত বা আইনে ব্যাচেলর ডিগ্রিসহ ১০ বছরের ব্যবস্থাপনা পর্যায়ের অভিজ্ঞতা কিংবা সিএফএ, সিএ, সিএমএ, সিএস, সিপিএ ইত্যাদি পেশাজীবী সনদসহ ১০ বছরের অভিজ্ঞতা। অবশ্য পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রার্থীদের ক্ষেত্রে উপরোল্লিখিত যোগ্যতা না থাকলেও চলবে।
এর আগে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে এ বছরের ৮ অক্টোবর ডিএসইর বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হক পদত্যাগপত্র জমা দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরের ৪ নভেম্বর এমডি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় ডিএসই। বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পর এক্সচেঞ্জটির এমডি পদের জন্য ২১ জন প্রার্থী আবেদন করেন। এদের মধ্য থেকে সাতজন প্রার্থীকে বাছাই করে ১০ ডিসেম্বর জুমের মাধ্যমে সাক্ষাত্কার নেয় এনআরসি। সাক্ষাত্কারের পর এনআরসির পছন্দের তালিকায় আলোচনায় আসে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ এনামুল হক সরদার ও এম আশিক রহমানের নাম।