প্যারেন্টিং ব্যাপারটা একটু কঠিনই বলা চলে। তবে এই মহামারীতে বেশিরভাগ মা-বাবার সুবর্ণ সুযোগ হয়েছে সন্তানের সাথে সময় কাটানোর। করোনা মহামারীর এই দুঃসময়ে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে, বাবা-মা এবং সন্তান উভয়ই সমানভাবে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। শিশু মনোবিশেষজ্ঞরা এমন একটি উপায় নিয়ে এসেছেন যা আপনার এবং আপনার সন্তানের উদ্বেগ কমাতে এবং মন স্থির করতে সহায়তা করবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুকে খুশি বা আনন্দ দিতে খুব বেশি কিছু করতে হবে না বা তাদের নতুন জিনিসগুলো শেখার জন্য দুর্দান্ত প্রচেষ্টা চালাতে হবে না। আপনাকে যেটা করতে হবে, শিশুদের সাথে কথা বলার সময় কিছু শব্দ ব্যবহার করতে হবে যা আপনার এবং আপনার সন্তানের মধ্যে একটি নতুন অর্থবহ সম্পর্কের সৃষ্টি করবে। শিশু মনোবিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী আপনি এমন কিছু শব্দ ব্যবহার করতে পারেন যা প্রকাশ করছে টাইমস অফ ইন্ডিয়া।
এবং
শিশুদের সাথে কথা বলার সময় আমরা শব্দকে যতটা মূল্যায়ন করবো সেটি তাদের জন্য ততটা সহায়ক হতে পারে। কিছু শব্দ ব্যবহার করে আমরা শিশুদের আত্মবিশ্বাস এবং অনুভূতিগুলো জাগ্রত করতে পারি। কোনো সন্দেহ ছাড়াই ‘এবং’ শব্দটি ব্যবহার করে আমরা দুটি আপাতদৃষ্টিতে দ্বন্দ্বমূলক ধারণা একই সময়ে সঠিক বলে মনে করতে পারি। যা শিশুদের সাথে আমাদের সুসম্পর্কই গড়ে তোলে না বরং, শিশুকে সঠিক দিকনির্দেশনাও দেয়।
তবুও
‘তবুও’ এই শব্দটির মাঝে আশার বাণী খুঁজে পাওয়া যায়। এটি সম্পূর্ণ নিরর্থক বাক্যকে এমনভাবে বোধগম্য করে তোলে যাতে আশা এবং প্রতিশ্রুতি থাকে। শিশুর জন্য এটি অনেক ভিন্নতা সৃষ্টি করে। শিশুরা সব জায়গায় আশা খুঁজে পেতে চায়। আর এই বিশেষ শব্দ অবচেতনভাবে তাদের মধ্যে আশা এবং আকাঙ্ক্ষার উপলব্ধি জাগ্রত করে।
কেন
বিশেষ করে দ্বিধা কিংবা সন্দেহ প্রকাশে বাবা-মায়েরা ‘কেন’ শব্দটি খুব ব্যবহার করে থাকেন। এটি বিভিন্ন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য উপায়ও বের করে দেয়। একটি নির্দিষ্ট সময়ে আপনার আচার- আচরণ বিশ্লেষণ কিংবা নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে আপনার সন্তানের মনোভাব বোঝার জন্য ‘কেন’ শব্দটি ব্যবহার করা উচিত।
প্রি বা প্রাক
পরিবর্তন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। যদি পিতা-মাতা হিসেবে আপনার মাঝে কিংবা আপনার সন্তানের মাঝে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়, তাহলে পরিবর্তনের প্রি-স্টেজগুলো বোঝতে হবে যা আপনাকে অনেক কিছু মোকাবিলা করতে সহায়তা করবে। তাই মনোবিশেষজ্ঞদের মতে, ‘প্রাক’ আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমরা সর্বদা বর্ধনশীল, পরিবর্তনশীল এবং বিকশিত হচ্ছি।
ইশ
‘ইশ’ একটি প্রত্যয়জাত শব্দ। এই শব্দ শিশুকে নতুন কিছু সৃষ্টির আনন্দে বিশ্বাসী করে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো শিশু ফুল আঁকার বিষয়ে আগ্রহ কম থাকে তখন তাদের বলা উচিত যে, দেখতে ফুলের মতোই এমন কোনো কিছু আঁকতে চেষ্টা করো। যার ফলে শিশুরা আত্মবিশ্বাস খুঁজে পায় যে তারা পারবে কি পারবে না। এমনকী এটি পিতা-মাতার ‘ইশ’ একটি সহায়ক শব্দ হতে পারে। যদিও অনেক পিতামাতা তাদের শিশুদের নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত হয়ে পরেন সেক্ষেত্রে ‘ইশ’ শব্দের ব্যবহার তাদের এ জাতীয় চিন্তাভাবনা থেকে মুক্তি দিতে পারে। নিখুঁত হওয়ার পরিবর্তে এটি তাদের চেষ্টা করার উৎসাহ যোগায়।