ঢাকা শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
কমেই চলেছে রবির শেয়ারের দাম
  • ব্যাংকবীমাবিডি
  • ২০২১-০২-০৭ ০২:০৯:০৯

বহুজাতিক কোম্পানি রবি আজিয়াটা গত ২৪ ডিসেম্বর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। শুরুর দিন থেকেই ১০ টাকা অভিহিত দরের এ শেয়ারটি দর বৃদ্ধির ঝলক দেখাতে থাকে। টানা ১৫ কার্যদিবস দর বেড়ে শেয়ারদর চলে যায় ৭০ টাকা ১০ পয়সায়। কিন্তু এ দরেও শেয়ার বিক্রি করেননি অধিকাংশ লটারি বিজয়ীরা। দর আরও বাড়বে এমন গুজবে শেয়ার ধরে রেখে এখন আফসোস করছেন তারা।

কোম্পানির লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, তালিকাভুক্তির ১৫ দিনের মধ্যে টানা ১১ কার্যদিবস এ শেয়ারে বিক্রেতার অভাব ছিল। এ সময় বাজারে গুজব ছিল বহুজাতিক এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় চলে যাবে। মূলত সে কারণেই অধিকাংশ আইপিও বিজয়ীরা শেয়ার দরে রাখেন। ১৫ কার্যদিবসে দর বেড়ে (ক্লোজ প্রাইস) ৭০ টাকা ১০ পয়সা হলেও এক দিন শেয়ারটির দর সর্বোচ্চ ৭৭ টাকায় কেনাবেচা হয়। এই হিসাবে আইপিও বিজয়ীদের এক লট শেয়ারদর হয়েছিল ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা। অর্থাৎ পাঁচ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে লাভ ছিল ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু তখনও তারা শেয়ার বিক্রি করেননি।

এদিকে টানা দর বৃদ্ধির পর এখন টানা দর কমছে রবির শেয়ারের। সর্বশেষ এ শেয়ার কেনাবেচা হচ্ছে ৪৪ টাকা ৯০ পয়সায়। সেই হিসাবে এখন রবির এক লট শেয়ারদর রয়েছে ২২ হাজার ৪৫০ টাকা। এখন এ শেয়ার বিক্রি করে লটারি বিজয়ীরা পাচ্ছেন ১৭ হাজার ৪৫০ টাকা। অর্থাৎ এ সময়ের মধ্যে তাদের মুনাফা প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। ফলে হা-হুতাশ করছেন লটারিতে বিজয়ী শেয়ারধারী বিনিয়োগকারীরা।

এসব বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান শেয়ারদর যখন ৬০ টাকা অতিক্রম করে তখনই তা বিক্রি করে দেয়া উচিত ছিল। বর্তমানে নিম্ন মুখী থাকা এ শেয়ারদর আবার আগের অবস্থানে যাবে কি না তা নিয়েও সন্দিহান তারা। তবে কেউ কেউ শেয়ার নিয়ে ইতিবাচক ভাবনাও ভাবছেন। যে কারণে অনেকই কম দরে কিনে রাখছেন এ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার।

এ প্রসঙ্গে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, শুধু আইপিওর শেয়ার নয়, অধিকাংশ বিনিয়োগকারীই অধিক লাভের আশায় বসে থাকেন। এটা ঠিক নয়। যেকোনো কোম্পানির আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে ভাবা উচিত ওই কোম্পানির শেয়ারদর ঠিক হওয়া উচিত। ওই সময়ই শেয়ার বিক্রি করে দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

পুঁজিবাজার থেকে ৫২৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে কোম্পানিটি। রবি আজিয়াটার আর্থিক বিবরণীতে দেখা যায়, সর্বশেষ পাঁচ বছরের মধ্যে দুই বছর লোকসানে ছিল কোম্পানিটি। এর মধ্যে ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে লোকসানে ছিল। ২০১৬ সালে এ প্রতিষ্ঠানটি লোকসান করে ৬৯৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। পরের বছর লোকসান কমে দাঁড়ায় ১০ কোটি ৪৬ লাখ টাকায়। পরবর্র্তীতে ব্যবসায়িকভাবে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়ে লাভে ফিরে আসে কোম্পানিটি। সর্বশেষ ২০১৯ সালে কোম্পানিটি মুনাফা করে ১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর আগের বছর (২০১৮ সালে) মুনাফা ছিল ২১৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ ২০১৯ সালে আগের চেয়ে মুনাফা অস্বাভাবিকহারে কমে গেছে।

যদিও ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠানটির আয় বেড়েছে। এ সময় কোম্পানিটির রাজস্ব আয় দাঁড়ায় সাত হাজার ৪৮১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আগের বছর এর পরিমাণ ছিল ছিল হাজার ৭৯৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। তবে ২০১৮ সালে রবির আয় কমে যায়। ২০১৭ সালে কোম্পানিটির আয় ছিল ছয় হাজার ৮২৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এর আগে ২০১৬ সালেও কোম্পানিটির আয় কমে।

৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৯ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, হিসাববছর শেষে পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া রবির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৬৪ পয়সা।

উল্লেখ্য, আলোচ্য সময়ের জন্য কোনো সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন করেনি কোম্পানিটি। সমাপ্ত হিসাববছরে রবির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে মাত্র চার পয়সা। আর গত পাঁচ হিসাববছরের গড় হারে শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ১৩ পয়সা।

শীর্ষ ডিলার ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজ
প্রাইমারি ডিলার হিসেবে অনুমোদন পেল রূপালী ব্যাংক
হাজার কোটি টাকার সুকুক বন্ড ইস্যু করবে আইসিবি