ঋণ কেলেঙ্কারি-অর্থ লোপাটে কোনো কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়ার পথ ধরলেও দুদকের তৎপরতায় ব্যাংকগুলো ফেরত পেয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি। গেছে রাষ্ট্রীয় কোষাগারেও। দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দুর্নীতি বন্ধে ব্যাংকগুলোকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি দুদককে নেতৃত্বে রেখে ক্ষমতায়ন করতে হবে।
হলমার্কের ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি। বিসমিল্লাহ গ্রুপ ও আনন টেক্সের ঋণ কেলেঙ্কারি প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। এতে আসামি হন ব্যাংকের এমডিসহ সাত কর্মকর্তা। এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতিতে ওয়ান ব্যাংকের এমডিসহ ১১ জনকে হাঁটতে হয়েছে দুদকের বারান্দায়। এ ছাড়া বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি বা সাবেক ফার্মার্স ব্যাংকের নিয়ম না মেনে ঢালাওভাবে ঋণ দেওয়া ব্যাংকগুলোকে নিয়ে গেছে প্রায় দেউলিয়ার দুয়ারে।
এমন হাজার হাজার কোটি টাকা জালিয়াতিতে রাষ্ট্রীয় ব্যাংক ছাড়াও এবি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, সাউথ বাংলা, ব্র্যাক ব্যাংক সাউথইট ব্যাংক, ফিনিক্স ফাইন্যান্সসহ নামিদামি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যেতে হয়েছে দুদকে।
দুদকের অনুসন্ধানে, হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হলেও দুদকের তৎপরতায় এখন পর্যন্ত ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৪টি অনুসন্ধান ও তদন্ত চলাকালে ৬ বছরে ৮৪ কোটি টাকা, ব্যাংক ও অর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৪৬১৪.০৭ কোটি টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া পাচার করা অর্থ সিঙ্গাপুর হংকং ও ব্রিটিশ পাউন্ডও ফেরত দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ জালিয়াতি ও অনিয়ম ঠেকাতে ব্যাংকগুলোকেই তৎপর হতে হবে।
আর অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি দুদককেই নেতৃত্বে আনতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর বলেন, অধ্যাপক ফরাস উদ্দিন বলেন, তার (দুদক) এত আইনি শক্তি নেই। তাকে অন্যদের ওপর নির্ভর করতে হয়। তাকে আরও ক্ষমতা দিতে হবে। একই সঙ্গে জনবলকে আরো দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। এ ছাড়া ব্যাংকিং সিস্টেমের মাধ্যমে টাকাটা যেভাবে বাইরে গেছে, সেভাবে ফিরিয়ে আনতে হবে।
এ ছাড়া দুর্নীতি দমনে দায়িত্বে থাকা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেরও জবাবদিহি বাড়াতে হবে বলেও মনে করেন সাবেক এই গভর্নর।