মানিলন্ডারিং মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচারসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এনআরবি ব্যাংকের দুই পরিচালক নাফিহ রশিদ খান ও নাভিদ রশিদ খানের এবং তাদের বাবা আমিনুর রশিদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কাছে চিঠি দিয়েছে দুদক। রোববার দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, দুর্নীতি, অনিয়ম, কর ফাঁকি এবং বিদেশে হুন্ডি কারবারের মাধ্যমে বিপুল অর্থবিত্ত গড়েছেন আমিনুর রশিদ খান ও পরিবার। বাবার সুবাদে দুই ছেলে এনআরবি ব্যাংকের পরিচালক হয়েছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে তাদের রয়েছে ফ্ল্যাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
মানিলন্ডারিং মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচারসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কাছে তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুদক। তাদের নামে দেশে-বিদেশে কোনো চলতি বা সঞ্চয়ী ব্যাংক হিসাব, স্থায়ী আমানত, শেয়ার, লকারসহ অন্যান্য ব্যাংক হিসাব থাকলে বিবরণী চাওয়া হয়েছে। এছাড়া স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি থাকলে সে তথ্যও চেয়েছে দুদক।
দুদকের অভিযোগ থেকে জানা যায়, আমিনুর রশিদ খান সিঙ্গাপুর কেন্দ্রিক হুন্ডি ব্যবসায়ের অংশীদার এনআরবি ব্যাংকের পরিচালক এম বদিউজ্জামান, তার স্ত্রী নাসরিন জামান ও মেয়ে তানিয়া জামান। এ চক্রের আরেক সহযোগী হচ্ছেন ইউরোপের হুন্ডি ব্যবসায়ী ইদ্রিস ফরায়জী। তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল এক্সচেঞ্জের মাধ্যমেই বিদেশে অবৈধ উপায়ে অর্থপাচার করা হয় বলে অভিযোগ আছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, দেশে-বিদেশে আমিনুর রশিদ খান এবং তার ছেলের নামে বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরমধ্যে দেশ ট্রেডিং কর্পোরেশন, বাল্ক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, জব্বার জুট মিলস লিমিটেড, বাংলাদেশ মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি লিমিটেড, হাইড্রোকার্বন, এম ইশরাত হিমাগার লিমিটেড। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছে জেনট্রেড এফজেডই (ইন্টারন্যাশনাল কমোডিটি ট্রেডিং) ইউএই, কমোডিটি ফাস্ট ডিএমসিসি (ইন্টারন্যাশনাল কমোডিটি ট্রেডিং) ইউএই, লোচ শিপিং ইন্টারমিডিয়ারি এফজেই (ইন্টারন্যাশনাল কমোডিটি ট্রেডিং) ইউএই।
আমিনুর রশিদ খান এবং তার দুই ছেলের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধানের দায়িত্বে রয়েছেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক ও উপ-সহকারী পরিচালক মো. সহিদুর রহমানের সমন্বয়ে দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম।