পাওনা টাকা চাওয়ায় বন্ধুদের নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশীতে ব্যাংকারকে মেরে চোখ উপড়ে ফেলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলাইমান আলম শেঠের ছেলে ওজার শেঠ ও তার বন্ধুরা। এ ঘটনায় মামলা হলে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু ঘটনার সপ্তাহ পার হলেও ওজার শেঠকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, পুলিশ ওজার শেঠকে গ্রেপ্তার করছে না।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে ভুক্তভোগীর পরিবার ওজার শেঠকে গ্রেপ্তার ও জীবনের নিরাপত্তা এবং দ্রুত বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করে। গত ৭ জানুয়ারি রাতে খুলশী থানায় একটি মামলা করা হয়।
মারধরে আহত হয়েছেন আলী এরশাদ (৩৯)। তিনি মিচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের নগরীর আগ্রাবাদ শাখার প্রিভিলেজ হেড। আর আসামিরা হলেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলাইমান আলম শেঠের ছেলে ওজার শেঠ ও ওজারের বন্ধু রাঈদ আহমদ কোরাইশী। এই দুজন ছাড়া অজ্ঞাত আরো দুজনকে আসামি করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী আলী এরশাদের বড় ভাই আলী ইমাম। তিনি বলেন, ওজার শেঠ ও রাঈদ আহমদ কোরাইশী তাদের পরিচিত ঢাকার মুনতাসির মামুন নামের একজনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পরিচয় থেকে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সম্পর্ক তৈরি হয়। সে সুবাদে ওজার শেঠ ও মুনতাসির মামুনের মাধ্যমে ব্যবসা করার জন্য বিভিন্ন সময়ে মোট ১৪ লাখ টাকা নেন রাঈদ আহমদ কোরাইশী। ওই টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন সময় টাকা পরিশোধ করার কথা বললেও টাকা আর ফেরত দেন না কোরাইশী।
পরে মামলা করার কথা বললে গত ৭ জানুয়ারি নগরীর খুলশী এলাকায় রাত সাড়ে ৮টায় বাসায় প্রবেশ করে আলী এরশাদকে রড ও লাঠি দিয়ে হামলা করে। এতে আলী এরশাদের বাম চোখ গুরুতর জখম হয়। হামলা করার সময় ওজার শেঠ ও রাঈদ আহমদ কোরাইশী উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করেছেন আলী ইমাম।
আলী ইমাম বলেন, আমার ভাই এরশাদ এখন পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ঘটনার পরের দিন খুলশী থানায় মামলা করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামি রাঈদ আহমদ কোরাইশীকে ওয়াসার মোড় থেকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু ঘটনার সাত দিন পার হলেও ওজার শেঠকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এখন আমার পরিবার হুমকির মুখে রয়েছে। এর দ্রুত বিচার চাই। এরশাদের ভাই চিকিৎসকদের বরাদ দিয়ে বলেন, আমার ভাইয়ের বাম চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে জানান চিকিৎসকরা।
ঘটনার পরের দিন ওজার শেঠের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেছিলেন, এসবের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত নন। ঘটনার সময় তিনি সেখানে উপস্থিত থাকলেও মারধর করেননি। মামলা হওয়ার পর থেকে তার মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে। তারা বাবা সোলাইমান আলম শেঠ এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে চাননি।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান বলেন, মামলা হওয়ার পর থেকে ওজার আত্মগোপনে রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।