হাইকোর্ট এক রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজাররাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ব্যক্তিগত লাভের জন্য অর্থ লুটপাটকারী ও অপরাধীদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন।
সোমবার হাইকোর্ট গত বছর ১৭ ডিসেম্বরের এক রায়ের পূর্ণাঙ্গ আদেশ প্রকাশের সময় এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) বর্তমান পরিচালনা পর্ষদকে অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে একটি পিটিশনের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মুহম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ পূর্ণাঙ্গ আদেশে এ পর্যবেক্ষণ দেন।
হাইকোর্ট বলেন, ‘এদেশের মানুষের দুর্ভাগ্য যে সরকার প্রধান যখন এদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নিষ্ঠার সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করছেন, তখন দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তদারকি ও তদারকির দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিশেষ করে ডিজিএম, জিএম, নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নররা ব্যক্তিগতভাবে অর্থ লুটপাটকারীদের প্রশ্রয় দিয়ে চলেছেন।’
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর এই বিষয়টি নিয়ে বেঞ্চ একটি সংক্ষিপ্ত আদেশ দেন। বেঞ্চের বিচারকের স্বাক্ষরের পর আজ পূর্ণাঙ্গ আদেশ প্রকাশ করা হয়েছে।
বিআইএফসি’র দশ শতাংশ শেয়ারের মালিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান টি মার্ট গত বছর মার্চে এ বিষয়ে একটি পিটিশন দেন হাইকোর্টে। পিটিশনে পি কে হালদারের আত্মসাৎকৃত মোট অর্থের পরিমাণ অনুসন্ধানে স্বতন্ত্র নিরীক্ষক নিয়োগের আবেদন করা হয়।
আবেদনে বলা হয়, পি কে হালদারের নেতৃত্বে বিআইএফসির তত্কালীন বোর্ড বিআইএফসি থেকে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর মান্নান প্রায় এক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে।
পূর্ণাঙ্গ আদেশে হাইকোর্ট বলেন, ‘এ মামলার ক্ষেত্রে, ২০০২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা জেনারেল ম্যানেজারদের আর্থিক বিপর্যয় সৃষ্টির জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে বিআইএফসির স্বতন্ত্র পরিচালক-কাম চেয়ারম্যান পদে থেকে এর বোর্ড সভা ও বার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করার জন্য নিয়োগ দেন।