ঢাকা রবিবার, মে ১৯, ২০২৪
সোমবার প্রথম ইসলামি বন্ডের নিলাম
  • ব্যাংকবীমাবিডি
  • ২০২০-১২-২৫ ০৯:১৪:৫৯

যাঁরা ব্যাংকে টাকা রেখে সুদ নিতে চান না, আবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফাতেও আপত্তি, তাঁদের জন্য সুখবর এসেছে। বাংলাদেশ সরকার প্রথমবারের মতো ইসলামি বন্ড সুকুকের নিলাম করতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে সারা দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের জন্য চার হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করবে সরকার। আগ্রহীরা যেকোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আগামী সোমবার এই বন্ড কেনার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আগ্রহীরা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা ও এর গুণিতক পরিমাণ টাকা নিলামের জন্য দাখিল করতে পারবেন। বন্ডের বিপরীতে বছরে ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ হারে মুনাফা দেবে সরকার। তবে মুনাফা বিতরণ হবে প্রতি ছয় মাস অন্তর। ইসলামি এ বন্ডের হার নির্দিষ্ট, কারণ এটি ইজারা (ভাড়া) সুকুক।

জানা যায়, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ‘সারা দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প’-এর সম্পদের বিপরীতে ছাড়া হচ্ছে এই সুকুক। বাংলাদেশ ব্যাংক চার হাজার কোটি টাকা করে দুই দফায় বিনিয়োগকারীদের কাছে সুকুকের সার্টিফিকেট বিক্রি করবে।

সুকুক ইসলামি বন্ড কীভাবে চলবে, এ নিয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, বিনিয়োগকারীদের টাকায় গড়ে উঠবে এই প্রকল্প। সরকার এই প্রকল্প ভাড়া নেবে। এই ভাড়ার টাকায় মুনাফা হিসেবে পাবেন বিনিয়োগকারীরা। আর মেয়াদ শেষে পুরো প্রকল্প কিনে বিনিয়োগকারীদের মূল টাকা ফেরত দেবে সরকার। এভাবে প্রথম এই বন্ডের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বিভিন্ন দেশেও এই পদ্ধতিতে ইসলামি বন্ড ছাড়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগ সুকুক (ইজারা সুকুক) ইস্যুর নিলাম ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। এ নিলামের মাধ্যমে পাঁচ বছর মেয়াদি চার হাজার কোটি টাকা অভিহিত মূল্যের সুকুক ইস্যু করা হবে। নিলামে দেশি–বিদেশি যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে অবস্থিত যেকোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিড দাখিল করতে পারবেন।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজের জন্য বা যেকোনো গ্রাহকেরা ১০ হাজার টাকার গুণিতক পরিমাণে সুকুকের সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে বিড দাখিল করতে পারবে। বিডে কৃতকার্য বিডারদের তাদের আবেদনের বিপরীতে বরাদ্দকৃত সুকুকের পরিমাণ একই দিনে ই-মেইলের মাধ্যমে জানানো হবে।

শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি বন্ড সাধারণত ‘সুকুক’ নামে পরিচিত। সুকুক একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ হচ্ছে সিলমোহর লাগিয়ে কাউকে অধিকার ও দায়িত্ব দেওয়ার আইনি দলিল। এখন থেকে সুকুক হবে সরকারের অর্থ সংগ্রহের নতুন একটি উৎস, যে অর্থ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ব্যয় করা হবে।

প্রচলিত বন্ড ও সুকুক বন্ডের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ঋণদাতা ও ঋণগ্রহীতার মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিই হচ্ছে বন্ড। এতে ঋণের পরিমাণ, পরিশোধের সময় ও সুদের হার উল্লেখ থাকে। প্রচলিত বন্ডে সুদ, ফাটকা ইত্যাদি থাকায় তা শরিয়াহসম্মত নয়। আর সুকুক হচ্ছে এমন একটি বিনিয়োগ সনদ, যাতে সম্পদের ওপর মালিকানা দেওয়ার নিশ্চয়তা থাকে। সাধারণত সুকুকধারীরা সম্পদের মালিকানা লাভ করেন এবং মুনাফা পান।

সুকুক ছাড়ার দিক থেকে বর্তমানে মালয়েশিয়া বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে। এ ছাড়া বাহরাইন, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও সুকুক প্রচলিত।

সুদহার ১৪ শতাংশের ওপরে যেতে দেওয়া হবে না
বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা চাকরি ছাড়লেন
ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বেচ্ছায় একীভূত হতে পারবে ব্যাংক