ঢাকা মঙ্গলবার, মে ৭, ২০২৪
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কর্মীদের উৎসাহ বোনাস দিতে কমিটি
  • ব্যাংকবীমাবিডি
  • ২০২১-১১-২১ ০১:২৩:৪৭

খেলাপি ঋণের অঙ্ক কমাতে ব্যর্থ হচ্ছে, রয়েছে মূলধনের ঘাটতিও। বছর শেষে মুনাফার পরিবর্তে গুনছে লোকসান। নেতিবাচক এতগুলো সূচকের পরও রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোতে বন্ধ নেই কর্মীদের উৎসাহ বোনাস।

প্রতিবছরই ইচ্ছামতো দেওয়া হচ্ছে এ ধরনের প্রণোদনা। কর্মীদের এক থেকে তিনটি পর্যন্ত উৎসাহ বোনাস দেওয়ার নজির আছে। এ পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকের কর্মীদের উৎসাহ বোনাসের জন্য নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

এ লক্ষ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবিএম রুহল আজাদকে প্রধান করে ১৪ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এ তথ্য।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কমিটির প্রধান এবিএম রুহুল আজাদ বলেন,কমিটি আগামী সপ্তাহে প্রথম বৈঠক করবে। প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতিটি ব্যাংকের আর্থিক সূচক পৃথক। অনেক ব্যাংকের সূচক ভালো। তাদের বিষয়টি ইতিবাচক বিবেচনায় নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, নতুন কমিটি বিদ্যমান নীতিমালা পর্যালোচনা করবে। নিয়মতান্ত্রিকভাবে সংযুক্ত করেই নতুন নীতিমালা তৈরি হবে।

জানা গেছে, এরইমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর উৎসাহ বোনাস দিতে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, কেবল শ্রেণিকৃত ঋণ এবং অন্যান্য সম্পত্তির বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতির পর তারল্যের অবস্থান সন্তোষজনক থাকলে কোনো ব্যাংক নিট মুনাফার ভিত্তিতে প্রণোদনা বোনাস দিতে পারবে।

এছাড়া বোনাস ও প্রণোদনা দেওয়ার পাশাপাশি তিরস্কারের ব্যবস্থাও থাকবে। যেসব ব্যাংক বছর শেষে মুনাফা করবে, খেলাপি ঋণ আদায়ের হার ভালো হবে ওই ব্যাংকের কর্মীদের উৎসাহ বোনাস দেওয়ার বিধান থাকবে। পাশাপাশি এর বিপরীত হলে করা হবে তিরস্কার।

অর্থ মন্ত্রণালয়ে ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খসড়া নীতিমালাটি পর্যালোচনা, পরিবর্তন, পরিবর্ধনের পর চূড়ান্ত করতেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৪ সদস্যের কমিটির সচিব হলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ এনামুল হক।

অন্য সদস্যরা হলেন-আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম-সচিব মৃত্যুঞ্জয় সাহা, অর্থ বিভাগের উপ-সচিব মোছা. নারগিস মুরশিদা, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক চানু গোপাল ঘোষ, রূপালী ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান, বেসিক ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ, সোনালী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক সুভাষ চন্দ্র দাস, জনতা ব্যাংকের সিএফও একেএম শরীয়ত উল্যাহ, অগ্রণী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (সিএফও) মো. মনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক মো. জসিম উদ্দিন ও কর্মসংস্থান ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক গৌতম সাহা।

জানা গেছে এর আগে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের জন্য উৎসাহ বোনাস প্রদান সম্পর্কিত একটি নীতিমালা জারি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে নীতিমালা প্রণয়নের ৬ বছর পার হলেও ব্যাংকগুলো তা অনুসরণ করেনি।

নীতিমালার বাইরে গিয়ে ইচ্ছামতো ব্যাংকগুলো উৎসাহ বোনাস নিয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে বছর শেষে লোকসানের পরও কর্মীদের উৎসাহ বোনাস দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের উৎসাহ বোনাস দেওয়া নিয়ে অনিয়মের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে একটি প্রতিবেদন পাঠায়।

সেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে শুধু বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল) প্রভিশন অব্যাহতি ব্যতীত মুনাফা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। মুনাফা করতে না পারায় ২০১৩ সাল থেকে বেসিক ব্যাংক উৎসাহ বোনাস দেওয়া বন্ধ রেখেছে।

এছাড়া ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী উন্নয়ন ব্যাংকে উৎসাহ বোনাস দেওয়া বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে লোকসান এবং ২০১৯ সালের ডিসেম্বরভিত্তিক হিসাবে প্রভিশন ঘাটতি সত্ত্বেও উৎসাহ বোনাস দেওয়া অব্যাহত রেখেছে রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংক।

এতে আরও বলা হয় গত বছরের ৩১ ডিসেম্বরভিত্তিক হিসাবে একমাত্র বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল) ছাড়া বাকি পাঁচটি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি রয়েছে ১৩ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। পাশাপাশি বাড়ছে খেলাপি ঋণের পরিমাণও।

রূপালী ব্যাংকে অফশোর ব্যাংকিং বিষয়ক সেমিনার
রাষ্টায়াত্ব ব্যাংকের শীর্ষকর্তাদের ১৬ শতাংশ নারী
সোনালী ব্যাংকের নতুন পদোন্নতির  নীতিমালা বাতিলে রুল