টেরাকোটা টাইলস রপ্তানির নামে কমার্স ব্যাংকের টাকা পাচার হওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ব্যাংকটির শীর্ষ তিন কর্মকর্তাকে আবারও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী রেজাউল করিম, বাণিজ্য বিভাগের সাবেক প্রধান আফজাল হোসেন খান ও দিলকুশা শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক ফকির নাজমুল করিম। গতকাল বৃহস্পতিবার কমার্স ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাঁদের সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৯ আগস্ট প্রথম আলোয় ‘টেরাকোটা টাইলসে টাকা পাচার’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশের পর এই ৩ কর্মকর্তাসহ ১১ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল কমার্স ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তবে কিছুদিন পর সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে তাঁদের কাজে বহাল করা হয়। ১১ আগস্ট প্রথম আলোয় ‘পলাতক ঋণখেলাপির বিলাসী জীবন দুবাইয়ে’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশের পর ব্যাংকটি এবার তিনজনের বিরুদ্ধে আগের ব্যবস্থাই নিয়েছে।
জানা গেছে, কমার্স ব্যাংকের গ্রাহক এসবি এক্সিম গ্রুপের অর্থ পাচারের প্রমাণ মিলেছে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিপূর্ণ নিরীক্ষায় (ফাংশনাল অডিট)। এই ঘটনায় সরাসরি সহায়তাকারী হিসেবে তিন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে ব্যাংকটি। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) যৌথ তদন্ত চলছে। মামলা করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এবং সিআইডি।
২০১৯ সালে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) বিশেষ পরিদর্শনে উঠে আসে, আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে মাটির তৈরি টেরাকোটা টাইলস রপ্তানি করেছে এসবি এক্সিম নামে ঝিনাইদহের একটি প্রতিষ্ঠান, যেটির মালিকের নাম শাহজাহান বাবলু। কিন্তু সেই রপ্তানির বিপরীতে ২০০ কোটি টাকা এখনো দেশে আসেনি। অথচ ওই রপ্তানি বিল কিনে প্রতিষ্ঠানটিকে ১৯০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। এখন সেই টাকা ফেরত পাচ্ছে না ব্যাংক।
জানা গেছে, এসবি পুণ্য গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহজাহান বাবলু বিদেশ থেকে রপ্তানি আদেশ দিয়ে সমুদয় অর্থ লোপাট করেছেন। শাহজাহান বাবলু (এসবি) ও তাঁর মেয়ে শামসুন ফারিয়া পুণ্যের নামেই ‘এসবি পুণ্য’র নামকরণ করা হয়।