ঋণ খেলাপি হওয়ায় ব্যাংকের পরিচালক পদ হারালেন রিক হক সিকদার। বাংলাদেশ ব্যাংক তার পরিচালক পদের মেয়াদ বাড়ানোয় সম্মতি দেয়নি। এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে গত রবিবার ন্যাশনাল ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, দুজন পরিচালকের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে আবেদন করা হয়েছিল। রিক হক সিকদারের বিষয়ে সিআইবি (ঋণ সংক্রান্ত অনিয়ম ও ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) থেকে ছাড়পত্র পাওয়া যায়নি। ঋণখেলাপি হওয়ায় রিক হকের পরিচালক পদের নিয়োগ অনুমোদন করা যায়নি।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর ন্যাশনাল ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভায় রিক হক সিকদার পদত্যাগ করে নতুন পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হন। তবে নতুন করে পরিচালক পদে থাকার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনুমোদন নেওয়ার জন্য ন্যাশনাল ব্যাংককে তাগাদা দেয়। ব্যাংকটি রিক হক সিকদারকে পরিচালক করার প্রস্তাব পাঠালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার ঋণের মান যাচাই করে। এতে বেরিয়ে আসে যে রিক হক সিকদার ঋণখেলাপি হয়ে পড়েছেন। মূলত একটি কোম্পানি ঋণখেলাপি হয়ে পড়েছে, যার পরিচালক রিক হক সিকদার।
এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়ে দেয়, রিক হক সিকদারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি থাকায় ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যাংকের পরিচালক পদে অনুমোদন দেয়ার সুযোগ নেই।
এরপর বিষয়টি সুরাহার জন্য রিক হক সিকদারের ভাই ও ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক রন হক সিকদার সোমবার (২৮ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে দেখা করতে যান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক নাইমুজ্জামান ভুঁইয়া ও সিকদার গ্রুপের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা সৈয়দ কামরুল ইসলাম (মোহন)। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, রন হক সিকদারকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে, ঋণ নিয়মিত হলেই রিক হক সিকদার পরিচালক পদ ফিরে পাবেন। সে পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা করত হবে।
প্রসঙ্গত, ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন জয়নুল হক সিকদার। তিনি মারা যাওয়ায় পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন তার স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার। ব্যাংকটিতে পরিচালক হিসেবে আছেন তাদের দুই ছেলে রন হক সিকদার ও রিক হক সিকদার এবং মেয়ে পারভীন হক সিকদার। পাশাপাশি ব্যাংকটিতে সিকদার গ্রুপের কর্মকর্তারাও স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে আছেন।