বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের প্রতিষ্ঠান মোনার্ক হোল্ডিংসকে শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট (ট্রেক) বা ব্রোকারেজ হাউসের সনদের অনুমোদন দিয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে এই অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সাকিবের প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আর ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে সম্প্রতি শেয়ার লেনদেনের এই ব্রোকারির সনদ দেয়ার অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি।
এর আগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট বা ট্রেক পেতে ৬৬টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। এর মধ্যে ৫১টি আবেদন চূড়ান্ত করে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। এই ৫১টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দিতে বিএসইসিতে আবেদন করা হয়।
ডিএসইর আবেদনের প্রেক্ষিতে ৩০টি প্রতিষ্ঠানকে ট্রেক সনদ দেয়ার অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। এই ৩০টি প্রিতিষ্ঠান হলো- মোনার্ক হোল্ডিংস, কবির সিকিউরিটিজ, সোহেল সিকিউরিটিজ, আরএকে ক্যাপিটাল, যমুনা ব্যাংক সিকিউরিটিজ, স্নিগ্ধা ইক্যুইটিস, ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটিজ কোম্পানি, সাউথ এশিয়া সিকিউরিটজ, ট্রাইস্টার সিকিউরিটিজ, ৩ আই সিকিউরিটিজ, সোনালি সিকিউরিটিজ, কেডিএস শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটিজ, আল হারমাইন সিকিউরিটিজ, মির সিকিউরিটিজ, টিকে শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটজ, এনআরবি ব্যাংক সিকিউরিটিজ, এসবিএসি ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট, আমায়া সিকিউরিটিজ, প্রুডেন্সিয়াল ক্যাপিটাল, তাকাফুল ইসলামী সিকিউরিটিজ, বিএনবি সিকিউরিটিজ, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স সিকিউরিটিজ, মাহিদ সিকিউরিটজ, বারাকা সিকিউরিটিজ, এএনসি সিকিউরিটিজ, এসএফআইএল সিকিউরিটিজ, তাসিয়া সিকিউরিটিজ, ডাইনেস্টি সিকিউরিটিজ, সেলেস্টিয়াল সিকিউরিটিজ এবং ট্রেড এক্স সিকিউরিটিজ।
এর মধ্যে মোনার্ক হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। আর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নাম প্রস্তাব করা হয়েছে কাজী সাদিয়া হাসানের।
ট্রেক হলো শেয়ারবাজারে লেনদেনের মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান। যার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারের লেনদেন করেন। এ হিসেবে ট্রেক অনেকটাই ব্রোকার হাউসের মতো। তবে ট্রেকের মালিকরা ব্রোকারেজ হাউসের মতো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ার পাবেন না।
গত বছরের ২৪ মার্চ ‘ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট বিধিমালা ২০২০’ খসড়া করে তা জনমত যাচাইয়ের জন্য মতামত চায় বিএসইসি। এ খসড়া চূড়ান্ত করতে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে মতামত চাওয়া হয়। পরবর্তীতে ১২ নভেম্বর ট্রেক বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।
এ বিধিমালা অনুযায়ী, এক্সচেঞ্জের প্রত্যেক প্রাথমিক শেয়ারহোল্ডার ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইনের আওতায় একটি করে ট্রেক (ব্রোকারেজ হাউজ) পাওয়ার অধিকার রাখেন।
প্রাথমিক শেয়ারহোল্ডারদের বাইরে ট্রেক পাওয়ার যোগ্যতার শর্তে রাখা হয়েছে— কোম্পানি, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কমিশন থেকে অনুমোদন যেসব প্রতিষ্ঠানের পরিশোধিত মূল্যধন কমপক্ষে ৫ কোটি টাকা, তারা ট্রেক পাওয়ার যোগ্য হবেন।
তবে দেশি-বিদেশি শেয়ারহােল্ডারের যৌথ উদ্যোগে গঠিত কোনো কোম্পানি আবেদন করলে তার ন্যূনতম পরিশােধিত মূলধন ৮ কোটি টাকা হতে হবে। আর সম্পূর্ণ বিদেশি শেয়ারহােল্ডারের মালিকানাধীন কোনো কোম্পানি আবেদন করলে তার ন্যূনতম পরিশােধিত মূলধন ১০ কোটি টাকা হতে হবে।
গেজেটে তিন ক্ষেত্রেই আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের নীট সম্পদের পরিমাণ সব সময় পরিশোধিত মূলধনের ৭৫ শতাংশের বেশি থাকতে হবে বলে শর্ত রাখা হয়েছে।
ট্রেক পাওয়ার জন্য ১ লাখ টাকা ফি দিয়ে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। এই ফি ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডারের মাধ্যমে এক্সচেঞ্জ বরাবর জমা দিতে হবে। আবেদন পাওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করে এক্সচেঞ্জ ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে তা মঞ্জুর করবে অথবা বাতিল করবে। আবেদন মঞ্জুর হলে নিবন্ধন ফি বাবদ ১ কোটি টাকা এক্সচেঞ্জ বরাবর ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ডিএসইর পর্ষদ সভায় ট্রেক ইস্যুর লক্ষ্যে আবেদন গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রথম দফায় আবেদনের সময় নির্ধারণ করা হয় ১৮ মার্চ। পরবর্তী তা আর ১০ দিন বাড়িয়ে ২৮ মার্চ নির্ধারণ করা হয়। এ সময়ের মধ্যে মোট ৬৬টি প্রতিষ্ঠান ট্রেকের জন্য আবেদন করেন।
আবেদন করা ৬৬টি প্রতিষ্ঠান হলো—
কবির সিকিউরিটিজ, আমার সিকিউরিটিজ, মোনার্ক হোল্ডিংস, সোহেল সিকিউরিটিজ, বেঙ্গ জিন জিউ টেক্সটাইল, আরএকে ক্যাপিটাল, ওয়িংস ফাইন, মিনহার সিকিউরিটিজ, বিপ্লব হোল্ডিং, যমুনা ব্যাংক সিকিউরিটিজ, অ্যাসোসিয়েট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজ, স্নিকদা ইক্যুইটিস, বিরিচ, ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটিজ, অ্যাসুরেন্স সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, সাউথ এশিয়া সিকিউরিটজ, ট্রিস্টার সিকিউরিটজ, ৩ আই সিকিউরিটজ, ব্রিজ স্টক অ্যান্ড ব্রোকারেজ, ফারইস্ট শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটিজ, কোলম্বিয়া শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটজ, সোনালি সিকিউরিটজ, টি.এ মার্চেন্টডাইজিং, রাহমান ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট, ফারিহা নিট টেক্সটাইল, কেডিএস শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটজ, আল হারমাইন সিকিউরিটজ, মির সিকিউরিটজ, ট্রাস্ট রিজোনাল ইক্যুইটি, এনসি সিকিউরিটজ, ইসলামিক ফিন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট, টি.কে. শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটজ, এমকেএম সিকিউরিটজ, এনআরবি ব্যাংক সিকিউরিটিজ, জাপান সোলারটেক (বাংলাদেশ), এন ওয়াই ট্রেডিং, এসবিএসি ব্যাংক সিকিউরিটজ, আমায়া সিকিউরিটজ, প্রোটেন্সিয়াল ক্যাপিটাল, তাকাফুল ইসলামি সিকিউরিটজ, এইচএসবি সিকিউরিটজ, স্মার্ট শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটজ, ইনোভা সিকিউরিটজ, বিএনবি সিকিউরিটজ, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স সিকিউরিটজ, মাহিদ সিকিউরিটজ, গিবসন সিকিউরিটজ, সিভিসি সিকিউরিটজ, বি অ্যান্ড বিএসএস ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, বেসিক ব্যাংক সিকিউরিটিজ, বারাকা সিকিউরিটজ, বিনিময় সিকিউরিটজ, রিলিফ এক্সচেঞ্জ, এএনসি সিকিউরিটজ, এসএফআইএল সিকিউরিটজ, তাসিয়া সিকিউরিটজ, ডেনিস্টি সিকিউরিটজ, এসকিউ ক্যাবল অ্যান্ড ওয়্যার, ইম্পিরোর সিকিউরিটজ অ্যান্ড ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট মিরপুর সিকিউরিটজ, ক্লিসটাল সিকিউরিটজ, ট্রেড এক্স সিকিউরিটজ, ম্যাটরিক্স সিকিউরিটজ, এসএমই ইনফরমেটিকস এবং বাংলাদেশ এসএমই করপোরেশন এবং ডিপি৭ লিমিটেড।