করোনা সংক্রামণে বাংলাদেশ যথেষ্ট ঝুঁকির মধ্যে আছে। আগামী দিনগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বিধি-নিষেধগুলো মানাসহ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে থাকবে। মনে রাখতে হবে, জীবন আগে। জীবন বাঁচানোর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে লকডাউন তুলে নেওয়া সমীচীন হবে না বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সরকার সংশ্লিষ্টদেরও এমন অভিমতে সায় রয়েছে। এ কারণে চলমান বিধি-নিষেধের (লকডাউন) সময়সীমা ৫ মে’র পরে আরও বাড়ানোর চিন্তা করা হচ্ছে। তবে কৌশল পরিবর্তন হতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, চলমান লকডাউন শেষ হবে আগামী ৫ মে রাত ১২টায়। ৫ মে লকডাউনের মেয়াদ শেষে ঈদের আগে কর্মদিবস পাওয়া যাবে তিনটি। এগুলো হচ্ছে ৬ মে (বৃহস্পতিবার), ৯ মে (রবিবার) ও ১১ মে (মঙ্গলবার)। এর মধ্যে ৭ ও ৮ মে হচ্ছে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার। এরপর ১০ মে সোমবার শবে কদরের ছুটি। আগামী ১২ মে বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে ঈদের ছুটি। রমজান মাস যদি ২৯ দিনে শেষ হয় তাহলে ঈদুল ফিতর হবে ১৩ মে। এক্ষেত্রে ১৩ ও ১৪ মে’ও (বৃহস্পতি ও শুক্রবার) ঈদের ছুটি থাকবে। তবে রমজান মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হলে ঈদের ছুটি আরও একদিন বাড়বে। সেক্ষেত্রে ১৫ মে’ও শনিবারও ছুটি থাকবে।
ভারতের নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বিধায় সেদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের আকাশ, স্থল ও নৌ সব সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে দেশে সংক্রামণের হারও কিছুটা কমতে শুরু করেছে। সংক্রামণের হার কমার এই শুরুটা ধরে রাখতে না পারলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। তখন আর কোনও লকডাউনে কাজ হবে না বলে মনে করেন সরকার সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে চলমান লকডাউনের মেয়াদ আরও কিছুদিন বাড়িয়ে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে এবার সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু করার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। সেক্ষেত্রে কৌশল কী হবে তা নিয়েও শলাপরামর্শ হচ্ছে। বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, ‘আমরা এখনও ঝুঁকিতে রয়েছি। কবে নাগাদ ঝুঁকিমুক্ত হবো তা নিশ্চিত নয়। এমন পরিস্থিতিতে সবকিছু স্বাভাবিক করে দেওয়া কতোখানি যুক্তিযুক্ত হবে তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। কোনও কিছুই চূড়ান্ত করা হয়নি। পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে। ভারতের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমাদের করণীয় ঠিক করতে হবে। মানুষের সংক্রামণ ও মুত্যুতো ঠেকাতে হবে।’
উল্লেখ্য, চলমান লকডাউন শেষ হবে ৫ মে মধ্যরাতে। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রয়েছে শিল্প-কারখানা। সীমিত পরিসরে ব্যাংকে লেনদেন করা যাচ্ছে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। দোকান ও শপিং মল খোলা রয়েছে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। জরুরি সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া যথারীতি সরকারি-বেসরকারি অফিস, গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে।