ঈদুল-উল-ফিতরের আগেই ঝড় ও লু হাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত এক লাখ কৃষককে সরকার পাঁচ হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা দিতে যাচ্ছে।
ডাক বিভাগের মোবাইল সার্ভিস ‘নগদ’ এর মাধ্যমে এ সহায়তা দেওয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) সূত্র জানায়, ঈদুল-উল-ফিতরের আগে এক লাখ কৃষকসহ ৩৬ লাখ দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারকে সরবরাহ সহায়তা দিতে এরইমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় ৯৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে। এর মধ্যে সবার আগে গত ৪ এপ্রিল তীব্র ঝড় ও লু হাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের চিহ্নিত করবে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে দরিদ্রদের নগদ সহায়তার জন্য অর্থ বিভাগের প্রস্তাবকে সম্মতি দিয়েছেন।
এর আগে বুধবার ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে গরিবদের গরিব থেকে বের করে নিয়ে আসা। সেভাবেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পরিবারগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মোবাইল আর্থিক পরিষেবাদির মাধ্যমে প্রত্যেকে নগদ সহায়তা পাবেন।
অর্থ বিভাগের মতে, মহামারি মোকাবিলায় সরকার সংশোধিত বাজেটে আট হাজার ৫০০ কোটি টাকার জরুরি তহবিল থেকে ৯৩০ কোটি টাকা সরবরাহ করবে। তবে জরুরি তহবিল হিসেবে সম্প্রতি ১০ হাজার কোটি টাকা থেকে ১৫ শতাংশ কমানো হয়।
তহবিলের মধ্যে, দিনমজুর, শ্রমিক, গৃহকর্মী এবং অটোমোবাইল শ্রমিকসহ ৩৫ লাখ দরিদ্রকে প্রায় ৮৮০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। এক লাখ কৃষককে অর্থনৈতিক দুর্দশা থেকে মুক্তি দিতে সরকার তাদের জন্য এককালীন নগদ পাঁচ হাজার টাকা করে মোট ৫০ কোটি টাকা ব্যয় করবে।
গত ১৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত নিম্নআয়ের প্রায় ৩৫ লাখ পরিবার এবং অতি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় এক লাখ কৃষকসহ ৩৬ লাখ পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি ঘোষণা দেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে জানান, গত ৪ এপ্রিলের ঝোড়ো হাওয়া, শিলাবৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়ে দেশের ৩৬টি জেলার ৩০ লাখ ৯৪ হাজার ২৪৯ হেক্টর ফসলি জমির মধ্যে ১০ হাজার ৩০১ হেক্টর ফসলি জমি সম্পূর্ণ এবং ৫৯ হাজার ৩২৬ হেক্টর ফসলি জমি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কাছ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এতে এক লাখ কৃষক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
কোভিড-১৯–এর ফলে কর্মহীন ও ক্ষতিগ্রস্ত এসব কৃষককে পাঁচ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার সুপারিশ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এ বাবদ ৫০ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা (নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও মুঠোফোন নম্বর) করছে। তালিকাটি চূড়ান্ত হলে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ কম বা বেশি হতে পারে।
২০২০ সালের ১৪ মে প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে ৫০ লাখ দরিদ্র পরিবার এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীর প্রত্যেককে ২ হাজার ৫০০ টাকা নগদ সহায়তা দেন।