বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, ‘আগামী দুই বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে বড় পরিবর্তন আসবে। সেজন্য পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের পরিমাণ বাড়াতে হবে। যাতে করে দেশের শিল্পায়ন আরও বেশি বিকশিত হতে পারে। শিল্পায়নের জন্য আমাদের ব্যাংকের ওপর বেশি নির্ভর করে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’
শনিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম ইআরএফের ‘ডায়ালগ অন বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ইআরএফ মিলনায়তনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের বাজেটের আকার পাঁচ লাখ কোটি টাকা, আমাদের বাৎসরিক অর্থনীতির আকার সাড়ে ৩০০ বিলিয়ন ডলার। অথচ প্রতিবছর আমাদের মাত্র এক থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়। এটা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। দেশের শিল্পায়ন হতে হলে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। সেজন্য আমাদের বন্ড মার্কেটের দিকে বেশি নজর দিতে হবে। পাশাপাশি ভালো ভালো কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে হবে।’
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘আমরা যখন বিএসইসির দায়িত্ব নিই, তখন বাজার মূলধন ছিল সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকা। গত নয় মাসে তা অনেকটাই বেড়েছে। বর্তমানে তা বেড়ে পাঁচ লাখ কোটি টাকার আশেপাশে অবস্থান করছে। তবে প্রতিদিনই শেয়ার মার্কেচ বাড়বে কিংবা কমবে এটা হতে পারে না। বাজার ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে একটা ভালো অবস্থানে চলে যাবে বলে আমরা আশা করছি।’
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকা বহির্ভূত কোম্পানির করের ব্যবধান মাত্র সাড়ে সাত শতাংশ। এই ব্যবধান কমপক্ষে ১৫ শতাংশ হতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে আগামী এই দুই খাতে করের ব্যবধান ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাবনা দিয়েছে বিএসইসি। তা না হলে ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে আগ্রহী হবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার এখন অনেক বেশি আধুনিকায়ন হয়েছে। ফলে এখন আর আগের মতো কারসাজির সুযোগ নেই। ফলে ১৯৯৬ কিংবা ২০১০ সালের মতো বাজারে বড় পতন হবে বলে মনে করি না।’
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্যাংকের রিজার্ভ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। তবে এই বিপুল পরিমাণ রিজার্ভ বাড়িয়ে লাভ নেই বরং রিজার্ভের টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। কারণ ছয় মাসের বেশি আমদানি ব্যয়ের অর্থ রিজার্ভে রাখা অর্থনীতির জন্য ভালো দিক না।’তাই এই টাকা বিনিয়োগের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও জানান তিনি।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘মিউচুয়াল ফান্ডের উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে। আগামীতে মিউচুয়াল ফান্ডে বড় ধরনের বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। এই কোয়ার্টারে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো ভালো করছে। ফান্ডগুলো ডিভিডেন্ড দিতে শুরু করেছে। আশা করছি, বিনিয়োগকারীরা ডিভিডেন্ড পেলে তাদের মধ্যে বিশ্বাস এবং আস্থা আসবে। এতে এ সেক্টর ঘুরে দাঁড়াবে।’
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘সামনের দিনে সুকুকসহ অন্যান্য যেসব বন্ড বাজারে আসবে, সেখানে দেখবেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অনেক পার্টিসিপেশন থাকবে।’