রেমিট্যান্স আহরণে ১০টি ব্যাংকের অবদান ৭৭ শতাংশের বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষ দশটি ব্যাংক হলো: ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, অগ্রণী ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, পূবালী ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক ও আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক। গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরে দেশে ১ হাজার ২৯৪ কোটি ৪৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে ৯৯৮ কোটি ৫ হাজার ডলার এসেছে এই ব্যাংক ১০টির মাধ্যমে।
রেমিট্যান্স আহরণে সবার শীর্ষে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের নাম। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতের এই ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৪০৪ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার। এই সময়ে দেশে আসা মোট রেমিট্যান্সের ৩১ দশমিক ২৬ শতাংশই এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বরে ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৫ কোটি ৪১ লাখ ডলার। এই হিসেবে ২০১৯ সালের শেষ ছয় মাসের তুলনায় ২০২০ সালের শেষ ছয় মাসে ব্যাংকটির মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ১১৮ শতাংশ।
দেশে রেমিট্যান্স আহরণে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সরকারি খাতের অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড। ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে জুলাই পর্যন্ত ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬২ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। এই ছয় মাসে দেশে আসা রেমিট্যান্সের ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশই এসেছে অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে। ২০১৯ সালের শেষ ছয় মাসে (জুলাই থেকে ডিসেম্বর) অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছিল ৯১৩ কোটি মার্কিন ডলার। এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ৭৮ দশমিক ৩ শতাংশ।
রেমিট্যান্স আহরণে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। ২০২০ সালের শেষ ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বেসরকারি খাতের এই ব্যাংকটির মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১০৯ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছিল ১১০ কোটি ৩২ লাখ ডলার। এই হিসেবে ব্যাংকটির রেমিট্যান্স আহরণ সামান্য কমেছে। এরপরও ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বরে দেশে আসা মোট প্রবাসী আয়ের ৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ এসেছে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে।
প্রবাসী আয় সংগ্রহে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে সরকারি খাতের জনতা ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটির মাধ্যমে ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৫০ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। ২০১৯ সালের একই সময়ে জনতা ব্যাংক দেশে রেমিট্যান্স এনেছিল ৪৫ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। এই হিসেবে রেমিট্যান্স আহরণে জনতা ব্যাংকের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ।
২০২০ সালে রেমিট্যান্স আহরণে বড় চমক দেখিয়েছে সরকারি খাতের রূপালী ব্যাংক লিমিটেড। এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির প্রবাসী আয় বেড়েছে তিন গুণের বেশি। এর মাধ্যমে ষষ্ঠ অবস্থানে চলে এসেছে রূপালী ব্যাংক। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৭ কোটি ৫১ লাখ ডলার। ২০১৯ সালের একই সময়ে ব্যাংকটি দেশে রেমিট্যান্স এনেছিল ১৪ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২১৮ শতাংশ।
সপ্তম অবস্থানে রয়েছে বেসরকারি খাতের ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড। ২০২০ সালের শেষ ছয় মাসে ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৬ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। ২০১৯ সালের শেষ ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) রেমিট্যান্স এসেছিল ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ডলার। এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংক এশিয়ার রেমিট্যান্স আহরণ বেড়েছে ৩২ দশমিক ৬ শতাংশ।
রেমিট্যান্স আহরণে পূবালী ব্যাংকের অবস্থান অষ্টম। ব্যাংকটির মাধ্যমে ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে দেশে ৩৫ কোটি ৯৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। ২০১৯ সালের একই সময়ে পূবালী ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছিল ৩১ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। রেমিট্যান্স আহরণে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ।
প্রবাসী আয় সংগ্রহে দশম স্থানে রয়েছে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। ২০২০ সালে রেমিট্যান্স আহরণে ব্যাংকটির ভাল প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ কোটি ১৩ লাখ ডলার। ২০১৯ সালের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১ কোটি ৩১ লাখ ডলার। রেমিট্যান্স আহরণে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪১ দশমিক ৪ শতাংশ।
বাকি ৪৬টি ব্যাংকের মাধ্যমে ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বরে ২৯৬ কোটি ৪৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।