বিদেশে পলাতক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) সহযোগী অবন্তিকা বড়ালকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে দুদকের উপপরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে অবন্তিকাকে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে দুদক।
দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব ভট্টাচার্য জানান, ২০১৯ সালে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তা বিদেশে পাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলার তদন্তে অবন্তিকা বড়ালের সম্পৃক্ততা পায় দুদক। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, পি কে হালদারের সাথে যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশে অবৈধ ব্যবসায় ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধানে করতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অবন্তিকাকে দুদকে তলব করা হয়। দুদক উপপরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন স্বাক্ষরিত নোটিশে গত ২৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় তাকে হাজির হতে বলা হয়। দুদকের চিঠি পাওয়ার পরও তিনি যথাসময় হাজির হননি। ব্যক্তিগত কোনো সমস্যার কারণে হাজির হতে পারেননি বা কবে হাজির হতে পারবেন- এ বিষয়েও লিখিত বা ফোনে দুদককে অবহিত করেননি অবন্তিকা।
এ দিকে গ্রেফতারের পর অবন্তিকা বড়ালকে আদালতে হাজির করে দুদক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ডের অনুমতি দেন। ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ ইমরুল কায়েশ এই আদেশ দেন।
দুদক সূত্র জানায়, পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত বছরের ৮ জানুয়ারি মামলা দায়ের করে দুদক। তার বিরুদ্ধে বিপুল অর্থ পাচারেরও অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার তদন্তে অবন্তিকা বড়ালের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। একই মামলায় ৪ জানুয়ারি পিকে হালদারের মামাতো ভাই আসামি শঙ্খ ব্যাপারীকে গ্রেফতার করে দুদক। তাকেও তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
গত ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে ইন্টারপোল। এর আগে ৫ জানুয়ারি পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদারসহ ২৫ ব্যক্তির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। তারা যাতে বিদেশ না যেতে পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি তদন্তের প্রয়োজনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন অনুসারে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে বলেও আদেশ দেন।
পি কে হালদার ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি এখন পলাতক।
দুদক জানান, পি কে হালদারের আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে তার বান্ধবীদের অ্যাকাউন্টে টাকা গেছে। পি কে হালদারের প্রতিষ্ঠানে অর্থ রেখে অনেকে হয়রানি ও ভোগান্তির মুখে পড়েছেন।