অবৈধ ক্যাসিনো ও মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান পরিচালনা হয় গত অর্থবছরে। এ কারণে ব্যাংকগুলোর সন্দেহজনক লেনদেন রিপোর্টিং বেড়েছে গত অর্থবছরে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী ও সরকারি অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিনিময় হয়েছে অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) বার্ষিক প্রতিবেদনে (২০১৯-২০) এ বিষয়ে পরিসংখ্যান রয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন রিপোর্টিং এজেন্সি গত অর্থবছর মোট তিন হাজার ৬৭৫টি সন্দেহজনক লেনদেন রিপোর্টিং (এসটিআর) করেছে। আগের অর্থবছর এ সংখ্যা ছিল তিন হাজার ৫৭৩টি। এ হিসাবে এসটিআর বেড়েছে ১০২টি বা ২ দশমিক ৮৫ শতাংশ। নির্বাচনের বছর হওয়ায় এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে অবশ্য তিন হাজার ৯৭৮টি এসটিআর হয়েছিল। তার আগের অর্থবছর হয়েছিল মাত্র ২ হাজার ৩৫৭টি এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক হাজার ৬৮৭টি। সন্দেহজনক লেনদেনের রিপোর্টিং বাড়লেও নগদ লেনদেন রিপোর্টিং (সিটিআর) কমেছে। গত অর্থবছর এক কোটি ৬১ লাখের বেশি সিটিআর হয়েছে। আগের বছর, যা ১ এক কোটি ৮০ লাখের ওপরে ছিল। কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১০ লাখ টাকার বেশি জমা বা উত্তোলন হলে বিএফআইইউতে সিটিআর হিসেবে রিপোর্টিং করতে হয়।
প্রতিবেদনে রয়েছে যে, গত অর্থবছর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থা ৭৮৭টি ঘটনায় বিভিন্নজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য নেয়। এর আগের অর্থবছরে ছিল ৫৬১টি। এর মানে বিভিন্ন সংস্থার তথ্য নেওয়া বেড়েছে ২২৬টি বা ৪০ দশমিক ২৯ শতাংশ। গত পাঁচ অর্থবছরের মধ্যে যা সর্বাধিক। আর গত অর্থবছর যে তথ্য বিনিময় হয়েছে তার মধ্যে সর্বোচ্চ ২৯১টি তথ্য বিনিময় হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে। আগের বছর হয়েছিল ২৪৭টি। দ্বিতীয় সর্বাধিক দুদকের সঙ্গে বিনিময় হয়েছিল ১১৪টি। আগের অর্থবছরে ছিল ৫৮টি। আর বাংলাদেশ ব্যাংক, শুল্ক্ক গোয়েন্দা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে বিনিময় হয়েছে ৩৮২টি। আগের অর্থবছর যা ২৫৬টি ছিল।
জানতে চাইলে বিএফআইইউর প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, রিপোর্টিং সংস্থাগুলোর মধ্যে এমনিতেই সচেতনতা বেড়েছে। ফলে আগে হয়তো রিপোর্ট করত না, কিন্তু এখন করছে। এছাড়া ক্যাসিনো ও মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নতুন করে অনেকের বিষয়ে রিপোর্ট হয়েছিল। যে কারণে এ ধরনের রিপোর্টিং বেড়েছে।