বছরের এক কিশোরের কাছে যদি জানতে চাওয়া হয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আর সেভিংসের মানে, উত্তরটা তা হলে গোলমেলে হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। অথচ এই বয়সের এক কিশোর সত্যিকারের ব্যাংক বানিয়ে সাড়া বিশ্বকে একেবারে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। সেই ব্যাংকের টাকা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনও চলছে। বিশ্বের সবচেয়ে তরুণ ওই ব্যাংকারের নাম হোসে অ্যাডলফো কুইসোকালা কন্ডোরি। পেরুর বাসিন্দা সে। মাত্র ৭ বছর বয়সে প্রথম চিলড্রেনস সেভিংস ব্যাংক গড়ে তোলে হোসে। প্রথমে তার সহপাঠীরাই ছিল গ্রাহক। এখন তার ব্যাংকের গ্রাহক সংখ্যা হাজার দু’য়েক! ৮ জন কর্মী নিয়ে ব্যাংক চালায় হোসে। তারা সবাই হোসের থেকে বয়সে অনেক বড়। হোসের প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকের নাম বার্টসেলানা স্টুডেন্টস ব্যাংক। হোসে দেখেছিলেন কিভাবে তার সহপাঠীদের একাংশ বাজে খরচ করে পকেটমানি শেষ করে।
উল্টো দিকে কোনো সহপাঠী হয়তো টাকার অভাবে বইটাও ঠিক মতো কিনে উঠতে পারে না। তখনই তার মাথায় ব্যাংক বানানোর এই ভাবনা আসে। তার ব্যাংকের সবচেয়ে অভিনব বিষয় হলো গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে টাকা রাখতে হয় না। বদলে পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের জিনিস রাখতে হয়। যে যত প্লাস্টিক জমাতে পারবেন সেই মতো তার অ্যাকাউন্টে টাকাও জমবে। সেই সঞ্চিত টাকা ডেবিট কার্ড দিয়ে লেনদেনও করতে পারবেন গ্রাহক। ব্যাংক শুরু হয়েছিল ক্লাসরুম থেকে। ব্যাংক চালু করে ডেবিট কার্ড ছাপিয়ে প্রথমে সহপাঠীদের দিয়েছিলেন তিনি। বিষয়টিতে এতটাই কৌতূহল জন্মায় যে ক্রমে স্কুলের বাইরেও প্রচুর গ্রাহক তার ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলেন। এর ফলে দুটো উদ্দেশ্য পূরণ হয়। এক, ছোটরা উপার্জন করতে শুরু করল এবং দুই, পেরুর রাস্তাঘাট প্লাস্টিক জঞ্জালমুক্ত হলো। এই কাজের জন্য ২০১৮ সালে হোসে আন্তর্জাতিক জলবায়ু পুরস্কার পায়। ইন্টারনেট।