এফবিসিসিআই সভাপতি মো: জসিম উদ্দিন বলেছেন, করোনা মহামারীতে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা এখনো ভয়াবহ অবস্থা পার করছেন। এ পরিস্থিতি বিবেচনায় বিনা শর্তে ঋণ শ্রেণিকরণ সুবিধা আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বাড়াতে চিঠি দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংঠন এফবিসিসিআই। গতকাল সকালে রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে এফবিসিসিআইর বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ঋণ শ্রেণিকরণের মেয়াদ বাড়ালে ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি আসবে এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার দ্রুত সম্ভব হবে। যেহেতু বর্তমানে একটি আয়কর আইন রয়েছে, তাই এফবিসিসিআইসহ সব সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে নতুন আইন প্রণয়ন করা উচিত। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতি তাড়াহুড়ো করে নতুন আয়কর আইন চূড়ান্ত না করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে বাংলাদেশকে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও উন্নয়নশীল দেশের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে দেশের সব খাতের ব্যবসায়ীদের একসাথে কাজ করতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে।
সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় কমিটি এবং এর অধীন বিভিন্ন উপকমিটি সভায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে এফবিসিসিআই। এ ছাড়াও ২০২৬ পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পলিসি অ্যাডভোকেসির অংশ হিসেবে ‘ইন্টারনাল রিসোর্স মোবিলাইজেশন অ্যান্ড ট্যারিফ রেশনালাইজেশন’, ‘গ্লোবাল মার্কেট এক্সেস ২০২১-২০২৬ অ্যান্ড বিয়ন্ড’, ‘ইনভেস্টমেন্ট মেজারস ফর সাসটেইনেবল ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট’ ও ‘সাসটেইনেবল এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট, সাবসিডিস অ্যান্ড ইনসেনটিভস’ শীর্ষক চারটি কর্মকৌশল হ্যান্ডবুক আকারে প্রণয়ন করা হয়েছে। যা শিগগিরই সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে। একই সাথে খাতভিত্তিক সক্ষমতা বাড়াতে এফবিসিসিআইতে ইনোভেশন সেন্টার স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনটির দরজা সব ব্যবসায়ীর জন্য খোলা। তাদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে এফবিসিসিআই পাশে থাকবে। এরই মধ্যে ৭৮টি স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠিত হয়েছে। খাতভিত্তিক সমস্যা চিহ্নিত করা ও দ্রুত সমাধানে কাজ করবে এসব কমিটি। দেশের শিল্প কারখানায় উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাথে এফবিসিসিআই যৌথভাবে কাজ করছে জানিয়ে সভাপতি বলেন, এরই মধ্যে এফবিসিসিআইতে সেফটি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো: জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহসভাপতি এম এ মোমেন, মো: আমিনুল হক শামীম, মো: আমিন হেলালী, সালাহউদ্দীন আলমগীর, মো: হাবীব উল্লাহ ডন ও এম এ রাজ্জাক খান রাজ এবং পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। এফবিসিসিআইর সাধারণ পরিষদের সদস্যদের উপস্থিতিতে সভায় ২০১৯-২০২০ বার্ষিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।