ঢাকা বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪
ঋণ পরিশোধে আরো ১ বছর সময় বাড়ানোর দাবি বিজিএমইএর
  • ব্যাংকবীমাবিডি
  • ২০২১-০৯-২১ ২১:৪০:১২

ঋণ পরিশোধে আরো এক বছর সময় বাড়ানোর দাবি করেছে দেশের তৈরী পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ। বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের কাছে লেখা সংগঠনের সভাপতি ফারুক হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ আবেদন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে যারা ইতঃপূর্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী এক বছর সময়ে ঋণের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করতে পারেনি সেসব প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ বিবেচনায় আরো এক বছর সময় বৃদ্ধি করলে শিল্প খাতে এবং ব্যাংক উভয়েই উপকৃত হবে। একই সাথে অর্থনীতির গতি বৃদ্ধি পাবে এবং খেলাপি ঋণের পরিমাণ হ্রাস পাবে।

এদিকে, চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিজিএমই নেতৃবৃন্দের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের এক বৈঠক গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত কাঁচামাল ও আনুষঙ্গিক দ্রব্যাদির মাধ্যমে রফতানি আদেশ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে লোকাল ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলার জন্য বন্ডেড ওয়্যার হাউজ লাইসেন্স এবং আইআরসি থাকার বাধ্যবাধকতা রহিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিজিএমএইর পক্ষ থেকে বলা হয়, তৈরী পোশাক শিল্পের চলমান পরিস্থিতিতে রফতানি কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন রাখতে লোকাল ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলার জন্য বন্ডেড ওয়্যার হাউজ লাইসেন্স এবং আইআরসি দাখিলের জন্য চাপ প্রয়োগ না করতে বলা হয়। একই সাথে বিদ্যমান আইন সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর সহযোগিতা করার বিষয়ে অনুরোধ করা হয়েছে।

এর আগে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দার কারণে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সব রকম অনাদায়ী ঋণ শ্রেণীকরণ না করে নবায়নের সুযোগ দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে দাবি করেছিল বিজিএমইএ। একই সাথে বেতনভাতার বিপরীতে প্রদত্ত পাঁচ হাজার কোটি টাকার ঋণ পরিশোধের কিস্তির সংখ্যা বাড়িয়ে দ্বিগুণ অর্থাৎ ১৮ মাস থেকে ৩৬ মাস করার দাবি করা হয়। গত ২২ আগস্ট বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান স্বাক্ষরিত পৃথক দু’টি চিঠিতে এ দাবি করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, করোনার কারণে রফতানি আদেশ স্থগিত হয়েছে। আবার রফতানি করলেও রফতানির বিল দেশে আসছে না। এ কারণে ব্যবসায়ীরা ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না। এমনি পরিস্থিতে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত অনাদায়ী ঋণখেলাপি না করতে বিজিএমএই থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।

গভর্নরের কাছে প্রেরিত বিজিএমইএ চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের রফতানি আয়ের বেশির ভাগ অর্জিত হচ্ছে তৈরী পোশাক থেকে। সরকার এই খাতের উন্নয়ন, বিকাশ ও প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে সবসময় সহানুভূতিশীল ও ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। বর্তমান করোনাভাইরাসে অতিমারীর সময় সরকার তৈরী পোশাক খাতকে আর্থিক ও নীতিসহায়তা প্রদান করে এ খাতকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্যাকেজ ঘোষণা করে।

বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দ আশা করেছিলেন, করোনাভাইরাসের প্রকোপ দিন দিন হ্রাস পাবে এবং তৈরী পোশাক ও বস্ত্র খাত আবার ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে বিদেশী ক্রেতারা ক্রয়াদেশ প্রদান শিথিল করেছেন। এবং যেসব পণ্য ইতোমধ্যে রফতানি করা হয়েছে তার বিপরীতে অনেক ক্ষেত্রে রফতানিমূল্য প্রদান করাও বন্ধ করে দিয়েছে বা দীর্ঘায়িত করছে।

চিঠিতে বলা হয়, বিদেশী ক্রেতা ও শ্রমিকদের ধরে রাখতে সঙ্কটকালীন সময়েও তৈরী পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা লোকসান দিয়ে তৈরী পোশাক রফতানি করে যাচ্ছে। চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, এতে বিদেশী ক্রেতাদের আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং রফতানি আদেশ প্রদানের পরিমাণ পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি করে দিয়েছে। কিন্তু এসব রফতানি আদেশের বিপরীতে পেমেন্ট পেতে আরো কয়েক মাস সময় প্রয়োজন হবে। এ কারণে উদ্যোক্তারা সমন্বিত তারল্য সঙ্কটের মধ্যে থাকবে। এই সব নানাবিধ প্রতিকূলতার মধ্যেও উদ্যোক্তারা শ্রমিকদের কর্মসংস্থান ব্যবস্থা চলমান রেখেছেন এবং তাদের বিনিয়োগ ধরে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সুদহার ১৪ শতাংশের ওপরে যেতে দেওয়া হবে না
বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা চাকরি ছাড়লেন
ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বেচ্ছায় একীভূত হতে পারবে ব্যাংক