ঈদুল আজহার আগে চলমান বিধিনিষেধ শিথিল করেছে সরকার। এ সময় ব্যাংকের লেনদেন ও পরিচালনার নতুন সময়সূচি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে তিন দিন স্বাভাবিক নিয়মে চলবে ব্যাংক। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যাংকে লেনদেন হবে।
লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করার জন্য ব্যাংক খোলা থাকবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এছাড়া আগামী শনিবার (১৭ জুলাই) ও ঈদের আগের দিন মঙ্গলবার (২০ জুলাই) শিল্প এলাকায় ব্যাংক সীমিত আকারে খোলা থাকবে।
মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধকল্পে সরকার কর্তৃক আরোপিত বিধি-নিষেধের মধ্যে ব্যাংকিং কার্যক্রম প্রসঙ্গে’ নতুন এ নির্দেশনা জারি করেছে।
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঈদের আগে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পরিপালন করে আগামী ১৫, ১৮ ও ১৯ জুলাই (বৃহস্পতিবার, রোববার ও সোমবার) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ব্যাংকে লেনদেন হবে। লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করার জন্য সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা থাকবে।
ঈদুল আজহার আগে তৈরি পোশাক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রফতানি বিল বিক্রয়ের এবং উক্ত শিল্পে কর্মরত শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বেতন-বোনাস ও অন্যান্য ভাতা পরিশোধের সুবিধার্থে ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে অবস্থিত তফসিলি ব্যাংকের তৈরি পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট শাখা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্য বিধি কঠোরভাবে পরিপালন সাপেক্ষে ১৭ ও ২০ জুলাই (শনিবার ও মঙ্গলবার) সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। এ সময় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ব্যাংকে লেনদেন হবে। লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করার জন্য বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা থাকবে।
১৭ ও ২০ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্লিয়ারিং ব্যবস্থা চালু থাকবে। তবে, ক্লিয়ারিং ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে উল্লিখিত এলাকার বাইরে অবস্থিত কোনো ব্যাংক শাখার ওপর চেক দেওয়া যাবে না।
এদিকে বুধবার (১৪ জুলাই) মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই (শুক্রবার) সকাল ৬টা পর্যন্ত আরোপিত সব বিধিনিষেধ শিথিল করেছে সরকার। তবে ঈদের পর ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত আবারও চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ থাকবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি বিবেচনায় ২৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত (সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যতীত) বিধিনিষেধ চলাকালে সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে ব্যাংক। ওই সময় সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ব্যাংকে লেনদেন হবে। লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করার জন্য বিকেল ৩টা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা থাকবে।
মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পরিপালন করে সীমিত সংখ্যক লোকবলের মাধ্যমে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের অত্যাবশ্যকীয় বিভাগসহ ব্যাংক স্বীয় বিবেচনায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক শাখা খোলা রাখতে পারবে।
- গ্রাহকদের হিসাবে নগদ, চেকের মাধ্যমে অর্থ জমা ও উত্তোলন, ডিমান্ড ড্রাফট, পে-অর্ডার ইস্যু ও জমা গ্রহণ চলবে। এছাড়াও বৈদেশিক রেমিট্যান্সের অর্থ পরিশোধ, সরকারের বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের আওতায় প্রদত্ত ভাতা, অনুদান বিতরণ চলবে। একই ব্যাংকের খোলা রাখা বিভিন্ন শাখা ও একই শাখার বিভিন্ন হিসাবের মধ্যে অর্থ স্থানান্তর, ট্রেজারি চালান গ্রহণ সংক্রান্ত কার্যাবলী চলবে। অনলাইন সুবিধা সম্বলিত ব্যাংকের সব গ্রাহকের এবং উক্ত সুবিধা বহির্ভূত ব্যাংকের খোলা রাখা শাখার গ্রাহকদের বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক চালু রাখা বিভিন্ন পেমেন্ট সিস্টেমস ও ক্লিয়ারিং ব্যবস্থার আওতাধীন অন্যান্য লেনদেন সুবিধা প্রদান এবং জরুরি বৈদেশিক লেনদেন সংক্রান্ত কার্যাবলী চলবে।
- কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।
- এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত নোট সরবরাহসহ সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।
- সমুদ্র, স্থল ও বিমান বন্দর এলাকায় (পোর্ট ও কাস্টমস এলাকা) অবস্থিত ব্যাংকের শাখা, উপশাখা ও বুথ সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসনসহ বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
- বিধিনিষেধ চলাকালে যেসব শাখা বন্ধ থাকবে সেসব শাখার গ্রাহক সেবা কার্যক্রম খোলা রাখা শাখার মাধ্যমে সম্পাদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বন্ধ করা শাখার গ্রাহকদের গ্রাহক সেবা প্রাপ্তি বিষয়ে অবহিত করতে শাখার দৃশ্যমান স্থানে তা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রদর্শন নিশ্চিত করতে হবে।
- বিধিনিষেধ চলাকালে ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিজ নিজ অফিসে যাতায়াতের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চলাচলের সময় নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত পরিচয়পত্র বহন করতে হবে।
- সার্কুলারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।