ঢাকা শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
ইন্টারনেট ব্যাংকিং গ্রাহক মাত্র ৩ শতাংশ !
  • ব্যাংকবীমাবিডি
  • ২০২১-০৫-১০ ২২:৪৩:১১

দেশে ইন্টারনেট ব্যাংকিং গ্রাহকের সংখ্যা দ্রুত বাড়লেও মোট ইন্টারনেট ব্যবহাকারীর তুলনায় এ সংখ্যা অতি নগণ্য।

দেশে প্রতি ১০০ জন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মধ্যে মাত্র ৩ জন ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা নিয়ে থাকেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশ্লেষণে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বছর

মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারী (মিলিয়ন সংখ্যা)

ইন্টারনেট ব্যাংকিং গ্রাহক (মিলিয়ন সংখ্যা)

ব্যাংকিং খাতের অংশ

ফেব্রুয়ারী ২০১৯

৯২.০৬

২.০৬

২.২৩%

ফেব্রুয়ারী ২০২০

৯৯.৯৮

২.৬১

২.৬১%

ফেব্রুয়ারী ২০২১

১১২.৭২

৩.৩৮

২.৯৯%

গেল তিন বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ইন্টারনেট ব্যাংকিং গ্রাহকের সংখ্যা দ্রুত বাড়লেও মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর তুলনায় এ সংখ্যা অতি নগণ্য।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক ছিল ২.২৩ শতাংশ, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ২.৬১ শতাংশ ও ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ২.৯৯ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে গেল বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় ৭.৭৭ লাখ বেড়ে ইন্টারনেট ব্যাংকিং গ্রাহকের সংখ্যা ৩৩.৮২ লাখে দাঁড়িয়েছে।

অন্যদিকে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির তুলনায় ইন্টারনেট ব্যাংকিং গ্রাহকের সংখ্যা ৫.৫৬ লাখ বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ২৬.০৫ লাখে।

অর্থাৎ, গেল বছর জুড়ে করোনার সময় ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর গ্রাহক সংখ্যা তার আগের বছরের (২০১৯) চেয়ে অনেক বেড়েছে।

তবে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর তুলনায় ইন্টারনেট ব্যাংকিং গ্রাহকের সংখ্যা দুই থেকে তিন কোটি  হওয়া উচিৎ বলে মনে করেন যমুনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা ইলিয়াস উদ্দিন আহমেদ।

তার মতে, প্রথাগত ব্যাংকিং থেকে অনানুষ্ঠানিক ব্যাংকিং সেবা বাড়াতে চাইলে এর বিকল্প নেই।

এ প্রসঙ্গে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, "ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বড় অংশই তরুণ। অন্যদিকে যারা ব্যাংকের গ্রাহক তাদের বড় অংশই মধ্য বয়সী। তাদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রবণতা তরুণদের চেয়ে কম। আবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে ব্যাংকিং সেবা নিতে অনেক সময় তাদের কাছে জটিলও মনে হয়। পাশাপাশি ব্যাংক গ্রাহকের একটি অংশ অতোটা শিক্ষিত নয়,"

"এসব কারণেই মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর তুলনায় ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা নেওয়া গ্রাহকের সংখ্যা নগন্য দেখা যাচ্ছে। তবে মহামারির কারণে ইন্টারনেট ব্যাংকিং গ্রাহকের সংখ্যা অনেক বেড়েছে, আগামীতেও এটি অব্যাহত থাকবে," বলেন তিনি।

তথ্য-প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে ব্যাংকিং সেবা নেওয়ার বিকল্প আগামীতে থাকবে না উল্লেখ করে ইসলামী ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, "ইন্টারনেট ব্যাংকিংকে আরও জনপ্রিয় করতে ব্যাংকগুলো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।"

প্রাইম ব্যাংকের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা এ ওয়াই এম মোস্তফা বলেন, "যেহেতু মোবাইলের মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার হয়, তাই ব্যাংকগুলোকেও মোবাইল ভিত্তিক ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে।"

এছাড়া তরুণদের জন্য নতুন নতুন পণ্য আনতে পারলে ব্যাংকগুলোর তরুণ গ্রাহক বাড়বে। তিনি জানান, ব্যাংকগুলো ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে কিছু ব্যাংক উচ্চ বিনিয়োগের জন্য চাইলেও আগাতে পারছেনা।

সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল আর্থিক সেবার প্রধান মো. জাফরুল হাসান বলেন, "ইন্টারনেট ব্যাংকিং গ্রাহকরা সাধারণত নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন। অন্যদিকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে মেগাবাইট ইন্টারনেট ব্যবহার করলেই তাকে ব্যবহারকারী হিসেবে গণ্য করা হয়, যদিও তারা নিয়মিত ব্যবহারকারী নন। এ কারণে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বেশি দেখায়।"

বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে একজন গ্রাহক দিনে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত স্থানান্তর করতে পারেন। প্রতি লেনদেনে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা পাঠানো যায়। দিনে লেনদেন করা যায় সর্বোচ্চ ১০টি।

আর কোনো প্রতিষ্ঠান এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত পাঠাতে পারে। এক্ষেত্রে প্রতি লেনদেনে সর্বোচ্চ সীমা ২লাখ টাকা। একদিনে সর্বোচ্চ ২০টি লেনদেন করা যায়।

ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন পেল ২টি প্রতিষ্ঠান
যেসব প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে আবেদন করেছে
 দৈনিক হাজার কোটি টাকার লেনদেন ব্যাংক অ্যাপসে