বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভারে ত্রুটির কারণে বন্ধ রয়েছে আন্তঃব্যাংক লেনদেন। বন্ধ রয়েছে এক ব্যাংকের চেক অন্য ব্যাংক থেকে নগদায়ন করা এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রি।
অনেকেই ব্যাংকে গিয়ে সেবা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহক।
রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখার মহাব্যবস্থাপক খান মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভারে সমস্যার কারণে আন্তঃব্যাংক লেনদেন সেবা বন্ধ রয়েছে গত মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) থেকে। অনেক গ্রাহক অন্য ব্যাংকের চেক এনে রূপালী ব্যাংকে জমা দিয়েছেন। আমরা সেসব চেক এখনও নিষ্পত্তি (সেটেলমেন্ট) করতে পারিনি। এটা আমাদের ব্যাংকের কোনো সমস্যা নয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশের (এনপিএসবি) সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আন্তঃব্যাংক লেনদেন চালু হয়েছে ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর। এনপিএসবির মাধ্যমে গ্রাহক নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে তাৎক্ষণিক তহবিল স্থানান্তরের পাশাপাশি এক ব্যাংকের চেক অন্য ব্যাংকের হিসাবে জমা করে লেনদেন সম্পন্ন করতে পারছেন ব্যাংকের মাধ্যমে। তহবিল স্থানান্তরে বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার, রিয়েলটাইম গ্রস সেটেলমেন্ট ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং ফান্ড ট্রান্সফার সুবিধা চালু রয়েছে।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্ভারে সমস্যার কারণে গত ১৩ এপ্রিল থেকে আন্তঃব্যাংক লেনদেন বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেক গ্রাহক। যারা গত ১৩ এপ্রিল ব্যাংকে চেক জমা দিয়েছিলেন তাদের ধারণা ছিল বুধবার (১৪ এপ্রিল) ছুটির পরে বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) তাদের লেনদেন সম্পন্ন হবে।
বৃহস্পতিবার অনেক গ্রাহক ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন তাদের চেক সেটেলমেন্ট হয়নি।
সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখায় গত ১৩ এপ্রিল দুপুরের পর ৫০ হাজার টাকার একটি চেক জমা দিয়েছিলেন আলাউদ্দিন মিয়া।
তিনি বলেন, ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখের ছুটির কারণে ব্যাংক বন্ধ থাকায় ১৫ এপ্রিল ব্যাংক গিয়ে জানতে পারেন এখনও তার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয়নি। কবে এ টাকা জমা হবে ব্যাংক থেকে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি।
শুধু আলাউদ্দিন মিয়া একা নন তার মতো বহু গ্রাহকের লেনদেন আটকে আছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্ভারের সমস্যার কারণে।
সার্ভার সমস্যার ভোগান্তিতে পড়েছেন সঞ্চয়পত্রের ক্রেতা ও মুনাফাভোগীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসসহ বিভিন্ন ব্যাংকে গিয়ে লেনদেন সম্পন্ন করতে সকাল থেকে বিকেলে পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কোনো লাভ হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনেকগুলো সার্ভারের মধ্যে কিছু পুরাতন সার্ভারও আছে। পুরাতন সার্ভারের লোড ক্যাপাসিটি ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত হলে তখন নতুন হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সংযোজন করতে হয়, সেই কাজই চলছে। আশা করছি, খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।