দেশের কৃষি খাতের আধুনিকায়ন, সমাজের অতিদরিদ্র এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন প্রভৃতি বিষয় বেশি মাত্রায় গুরুত্ব প্রদান করে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।
মঙ্গলবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বেসরকারি খাতের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রপ্তানির সার্বিক পরিস্থিতি সন্তোষজনক বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেসরকারি খাতের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
সাম্প্রতিক সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পেলেও, যেসব দেশে আমাদের প্রবাসীরা বেশি হারে নিয়োজিত রয়েছেন, সেখান থেকে প্রবাসীরা দেশে ফেরত এলে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।
ড. মসিউর রহমান বলেন, বর্তমান সময়ের বিবেচনায় জাতীয় সঞ্চয়ের কার্যকর ব্যবহার এবং একই সাথে অর্থনীতিতে অর্থপ্রবাহ নিশ্চিতরাখার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকার করোনা পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবেলা করেছে এবং এ লক্ষ্যে সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন ও সময়োপযোগী বাস্তবায়নের ফলে দেশের অর্থনীতি সঠিক পথেই পরিচালিত হচ্ছে।
ওয়েবিনারের মূল প্রবন্ধে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির নানামুখী প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও গত ছয় মাসে দেশের অর্থনীতি কাঙ্খিত মাত্রায় পরিচালিত হয়েছে। তবে আমাদের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে আরও বেশকিছু কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন এবং এলক্ষ্যে সরকারী ও বেসরকারি খাতকে একযোগে কাজ করতে হবে।
‘২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদশের জিডিপি ৩৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার উন্নীত হলেও, উক্ত সময়ে জিডিপি’র লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৪৩.৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।’
বক্তব্যে তিনি দেশের রাজস্ব খাতে দ্রুততার সাথে অটোমেশন প্রক্রিয়ার পুরোপুরি বাস্তবায়ন এবং অর্থবছরের ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে কোভিড মহামারি মোকাবেলায় ঘোষিত বাজেট কার্যক্রমের পর্যালোচনা এবং বাজেটে বরাদ্দকৃতে অর্থ ব্যবহরের অগ্রগতি মূল্যায়নের উপর জোরারোপ করেন।
মহামারি মোকাবেলায় এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দকৃত প্রণোদনা প্যাকেজ দ্রুততার সাথে ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ নিশ্চিতকরণের প্রস্তাব করেন এবং একই সাথে এসএমই ব্যাংক প্রবর্তন, সিএসএমইখাতের সংজ্ঞা পুনঃনির্ধারণ ও এসএমই উদ্যোক্তাদের ডাটাবেইজ প্রস্তুতকরণে জোরারোপ করেন।
বিশেষ আলোচকের বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংক-এর সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, করোনা মহামারির কারণে আমাদের অর্থনৈতিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। তবে করোনা মোকাবেলায় সরকারের নেতৃত্ব সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে এবং বাস্তবতায় নিরিখেই সরকার ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, বর্তমান অবস্থায় ৬% হারে প্রবৃদ্ধি হলেও আমাদের অবস্থান ভালো থাকবে, তবে এ অবস্থা উত্তরণে প্রণোদনা প্যাকেজ সহ নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ, প্রয়োজনীয় নীতিমালার সহজীকরণ এবং ঘোষিত নীতিমালায় এ মুহূর্তে কোনো ধরনের পরিবর্তন উচিত নয় বলে মত প্রকাশ করেন। এছাড়াও তিনি অন্তর্ভূক্তিমূলক অর্থনীতির ওপর আরো বেশি হারে গুরুত্বারোপের আহ্বান জানান এবং কৃষি ও এমএসএমই খাতকে বেশি হারে গুরুত্ব দিতে হবে বলে মত প্রকাশ।
আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংক-এর সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট (পিআরআই)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ-এর চেয়ারম্যান ড. এম মাশরুর রিয়াজ বিশেষ আলোচক হিসেবে যোগদান করেন।
অফিস : দক্ষিণ বনস্রী, ঢাকা। ই-মেইলঃ bankbimabd@gmail.com, editor.bankbimabd@gmail.com
ফোন: +৮৮০১৭১৮৬২১৫৯১