বীমা খাতের কোম্পানির উদ্যোক্তাদের সম্মিলিতভাবে ৬০ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে। একইসঙ্গে কোম্পানি জীবন বীমা খাতের হলে নূ্যনতম পরিশোধিত মূলধন হতে হবে ৩০ কোটি এবং সাধারণ বীমা হলে ৪০ কোটি টাকা। আগামী এক মাসের মধ্যে এ শর্ত পরিপালনে সম্প্রতি বীমা কোম্পানিগুলোকে চিঠি দিয়েছে বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ। এ চিঠিকে কেন্দ্র করে গতকাল মঙ্গলবার লাফিয়ে বেড়েছে এ খাতের শেয়ারদর।
যদিও বীমা খাতের শীর্ষ কর্মকর্তা এবং শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তাদের ৬০ শতাংশ শেয়ার ধারণের শর্ত সম্পূর্ণ অবাস্তব এবং বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এ কথা আইডিআরএর একজন কর্মকর্তাও বলেছেন, এটা ঠিক যে, আইনের এ ধারা বিতর্কিত ও অস্পষ্ট। আইডিআরএর সকলে বুঝতে পারছেন, এ ধারা সংশোধন করতে হবে।
আইডিআরএর এ চিঠিকে কেন্দ্র করে গতকাল শেয়ারবাজারে বীমা কোম্পানির শেয়ার লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে অন্য অধিকাংশ খাতের বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমলেও পপুলার লাইফ, প্রগতি লাইফ এবং প্রগ্রেসিভ লাইফ বাদে বাকি ৪৫টির বাজারদর প্রায় ১০ শতাংশ হারে বেড়েছে। এর থেকে আর বেশি দর বৃদ্ধির সুযোগও ছিল না।
আইডিআরএ সূত্র জানায়, ২০১০ সালের বীমা আইনের ২১ ধারা পরিপালনে ২০১৬ সালে নতুন বিধি করা হয়। বিধি অনুযায়ী দুই সপ্তাহ আগে জীবন বীমা খাতের চারটি বাদে বাকি সব কোম্পানিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সাধারণ বীমা খাতের কোম্পানিগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে গত ১৭ জানুয়ারি। চিঠিতে শর্ত পূরণে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলেও পুরোনো (২০১০ সালে আইন করার আগের) কোম্পানিকে এ শর্ত পূরণ করতে হবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
জীবন বীমা কোম্পানিতে পাঠানো চিঠিতে স্বাক্ষর রয়েছে আইডিআরএর কর্মকর্তা শামসুল আলম খানের। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইডিআরএর দিক থেকে এটা স্পষ্ট, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে যেগুলোর উদ্যোক্তাদের মোট শেয়ার ৬০ শতাংশের কম, তাদের পক্ষে এ ধারা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। হয়তো আইনের এ ধারা সংশোধনের উদ্যোগ নিতে হবে।
বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ সাইফুদ্দিন চৌধুরী বলেন, এই শর্ত কখনও বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এ বিষয়ে আইডিআরএর সঙ্গে তারা কথা বলবেন। তাছাড়া পরিশোধিত মূলধনও এক মাসের মধ্যে বৃদ্ধি করা সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে আইডিআরএর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন এবং সদস্য (আইন) দলিল উদ্দিনের কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নাই। সাধারণ বীমা কোম্পানিতে চিঠি পাঠিয়েছেন সংস্থার পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, 'চেয়ারম্যান মহোদয় যেভাবে চিঠি লিখতে বলেছেন, সেভাবেই চিঠি দিয়েছি। এর ব্যাখ্যা তিনি ভালো জানেন।'
চিঠির ব্যাখ্যা কারও কাছে স্পষ্ট না হলেও গতকাল বীমা খাতের গড় শেয়ারদর প্রায় ৮ শতাংশ হারে বেড়েছে, ছিল বিক্রেতা শূন্য অবস্থায়। অন্য প্রায় সব খাতের লেনদেন কমলেও বীমা খাতের লেনদেন ১০৪ কোটি টাকা বেড়ে ১৫৯ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। গতকাল ডিএসইএক্স সূচক সাকল্যে ১৯ পয়েন্ট বাড়লেও বীমা খাত সম্মিলিতভাবে ২৪ পয়েন্ট যোগ করেছে। এদিন ডিএসইতে ১৮১ শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১০৬টির দর।
অফিস : দক্ষিণ বনস্রী, ঢাকা। ই-মেইলঃ bankbimabd@gmail.com, editor.bankbimabd@gmail.com
ফোন: +৮৮০১৭১৮৬২১৫৯১