রীতিমতো রেকর্ড গড়েই গত সপ্তাহটা শেষ করেছে দেশের পুঁজিবাজার। শেষ কার্যদিবসে সূচকের ব্যাপক উত্থানের পাশাপাশি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধনও রেকর্ড উচ্চতায় উঠে গেছে।
বৃহস্পতিবার ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ১ হাজার ৭০৯ কোটি ৬৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। দেশের প্রধান পুঁজিবাজারটির ইতিহাসে এর আগে কখনই বাজার মূলধন ৫ লাখ কোটি টাকার ঘর স্পর্শ করেনি। আগের সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন ছিল ৪ লাখ ৭০ হাজার ২৭০ কোটি ৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে এক্সচেঞ্জটিতে বাজার মূলধন বেড়েছে ৩১ হাজার ৪৩৯ কোটি ৬০ লাখ ৯৫ হাজার টাকা বা ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের লক্ষ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়ার কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে। বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন পাওয়া ও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অপেক্ষায় থাকায় বাজার কিছুটা চাঙ্গা হয়েছে। সামনের দিনগুলোয় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পুঁজিবাজারেও গতিশীলতা ফিরে আসার প্রত্যাশা করছেন বিনিয়োগকারীরা। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে গত চার সপ্তাহের লেনদেনে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স ৫ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে সপ্তাহ শেষে ৫ হাজার ৯০৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ৫ হাজার ৬২২ পয়েন্ট। এ সময়ে নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস৩০ ৯ দশমিক ২১ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ২৩৭ ও শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৩২৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সূচক ও বাজার মূলধনে উল্লম্ফন হলেও গত সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন ৬ দশমিক ১১ শতাংশ কমেছে। স্টক এক্সচেঞ্জটিতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে ১ হাজার ৮৬৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১ হাজার ৯৯০ কোটি ২৪ লাখ টাকা। পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৯ হাজার ৩৪৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৯ হাজার ৯৫১ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৬৭টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে সপ্তাহ শেষে দর বেড়েছে ১৪৬টির, কমেছে ১৬৮টির, অপরিবর্তিত ছিল ৫০টির আর লেনদেন হয়নি তিনটির।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো) লিমিটেড। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির মোট ৮১২ কোটি ২১ লাখ ১৬ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩৩ দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি। লেনদেনে এর পরের অবস্থানে ছিল রবি আজিয়াটা লিমিটেড। কোম্পানিটির মোট ৫৮০ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে পাঁচ কার্যদিবসে, যা আগের সপ্তাহের চেয়ে ৪৭ দশমিক ২৭ শতাংশ বেশি। এছাড়া লেনদেনে শীর্ষ ১০ সিকিউরিটিজের তালিকায় রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেড, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড, আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড, সামিট পাওয়ার লিমিটেড, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ও সিটি ব্যাংক লিমিটেড।
দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে সিএসসিএক্স সূচক ৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়ে সপ্তাহ শেষে ১০ হাজার ৩৯১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩২৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১২৭টির, কমেছে ১৪৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫১টির বাজারদর। ডিএসইর মতো সিএসইতেও গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। এক্সচেঞ্জটিতে পাঁচ কার্যদিবসের লেনদেনে মোট ৪৪১ কোটি ২৮ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৪৮৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
অফিস : দক্ষিণ বনস্রী, ঢাকা। ই-মেইলঃ bankbimabd@gmail.com, editor.bankbimabd@gmail.com
ফোন: +৮৮০১৭১৮৬২১৫৯১