চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র ১.৬%

ব্যাংকবীমাবিডি || ২০২১-০১-০৭ ০৪:১৫:৩৩

image

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি মাত্র ১ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি রপ্তানিমুখী শিল্পের উৎপাদনের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। করোনার প্রভাবে চাহিদা কম থাকায় রপ্তানি খাতে বিশেষত তৈরি পোশাক থেকে আয় দুর্বল থাকতে পারে। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার তুলনামূলক কম হতে পারে। এর ফলে বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের বর্তমান ধারা বজায় নাও থাকতে পারে। এ দুটি অনুমানের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি এত কম হওয়ার আভাস দিয়েছে।

বিশ্ব অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি নিয়ে 'গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস' নামে বিশ্বব্যাংকের ষাণ্মাষিক প্রকাশনায় বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে এমন পর্যবেক্ষণ রয়েছে। রিপোর্টটি গতকাল ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত হয়েছে। এর আগে গত জুনে প্রকাশিত একই রিপোর্টে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ ছিল মাত্র ১ শতাংশ। হালনাগাদ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসের কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী সংশোধন হয়েছে। আর আগামী অর্থবছরে (২০২১-২২) কিছুটা উন্নতি হয়ে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ মনে করছে বিশ্বব্যাংক।

বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের অনুমান সরকারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম। চলতি অর্থবছরের বাজেটে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৮ দশমিক ২ শতাংশ। সংশোধিত বাজেটে, যা ৭ দশমিক ৪ শতাংশ নির্ধারণ করা হচ্ছে। গত অর্থবছরে করোনার সংক্রমণের মধ্যে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে। তবে গত অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশ প্রাক্কলন করেছিল বিশ্বব্যাংক।

বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসের বিষয়ে গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, 'বিশ্বব্যাংক প্রবৃদ্ধি নিয়ে একেক সময় একেক রকম কথা বলে। আমরা তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে হিসাব করেছি। আমাদের অর্থনীতি এখন ভালো অবস্থায় আছে। '

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, অতিমারির আগে বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল প্রবৃদ্ধির দেশ। করোনার কারণে স্থানীয় উৎপাদন কার্যক্রম অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত অর্থবছরে রপ্তানি কমেছে অনেক বেশি হারে। চলতি অর্থবছরেও রপ্তানিতে গতি কম। সব মিলিয়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার পরিমিতি থাকতে পারে।

বিশ্ব অর্থনীতি :বিশ্বব্যাংক মনে করছে এ বছর বিশ্ব অর্থনীতিতে ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। বিশ্বব্যাপী করোনার টিকা ব্যাপকভাবে দেওয়া হবে ধারণা থেকে এমন ইতিবাচক পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালে বিশ্ব অর্থনীতি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ সংকোচন হয়েছে বলে প্রাক্কলন রয়েছে বিশ্বব্যাংকের। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি নীতিনির্ধারকরা যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে করোনার সংক্রমণকে বশে আনতে পারে এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য সংস্কার আনতে পারে তাহলে প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হবে।

চলতি অর্থবছরে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ অর্থনীতি ভারতের প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৬ শতাংশ কমবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। অন্যদিকে নেপালে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ, পাকিস্তানে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। ভুটানে প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। ফলে দেখা যাচ্ছে, একই এবং কাছাকাছি সময়ে অর্থবছর হিসাব করা দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বেশি। তবে পঞ্জিকাবর্ষ হিসেবে অর্থবছর রয়েছে আফগানিস্তান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার। মালদ্বীপে ২০২১ সালে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কায় ৩ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

অফিস : দক্ষিণ বনস্রী, ঢাকা। ই-মেইলঃ bankbimabd@gmail.com, editor.bankbimabd@gmail.com

ফোন: +৮৮০১৭১৮৬২১৫৯১