মালয়েশিয়ান রিঙ্গিতের বিপরীতে কম টাকা পাওয়ায় বৈধ চ্যানেলে দেশে টাকা পাঠানোর আগ্রহে ভাটা লক্ষ্য করছেন রেমিটেন্স হাউজগুলো। সরকারি প্রণোদনা আর নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করেও যেন প্রবাসীদের বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রক্রিয়া ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
ফলে বিশ্বের শীর্ষ ৩০টি দেশ থেকে রেমিট্যান্স আসা দেশের মধ্যে মালয়েশিয়া ছিল পঞ্চম স্থানে। যা এখন বর্তমানে সপ্তমে নেমে এসেছে। প্রণোদনা বাড়ানোর পাশাপাশি ডলারের বিনিময় মূল্য বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার দাবি প্রবাসীদের।এই সুযোগে হুন্ডি কারবারি ও টাকা পাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। রিঙ্গিত প্রতি ব্যাংক রেট থেকে এক টাকা বেশি পাচ্ছে হুন্ডিতে এবং তাদেরকে কর্মস্থল থেকে দূরের ব্যাংকে গিয়ে লাইনে দাঁড়ানো লাগছে না। হুন্ডিতে টাকা পাঠানো তুলনামূলক সহজ ও লাভজনক বলে প্রবাসীরা সেটাই অবলম্বন করছে।
এপ্রিলে রিঙ্গিত প্রতি ২৪ টাকা ৫ পয়সা থেকে ২৩ টাকা ৫০ পয়সায় নেমে এসেছে যা গত মাসে ২৬ টাকা ছিল যার কারণে প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাংকিং চ্যানেলে বেশ আগ্রহ দেখা গিয়েছিল। তাতে আগের থেকে ৪০ শতাংশ রেমিট্যান্স বেড়েছিল।এদিকে মার্চ মাসে মালয়েশিয়া থেকে বৈধ পথে ৯৮ দশমিক ৮০ মিলিয়ন ইউএস ডলার যা এক হাজার ৫৭ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এপ্রিল মাস থেকে বাংলাদেশে রিঙ্গিতের দাম কমায় প্রবাসীরা আবারও হুন্ডিতে টাকা পাঠাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
আগের মাস থেকে ২০ শতাংশ কমে যাবার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ডলার বা রিঙ্গিতের বিনিময় মূল্য যাই হোক আড়াই শতাংশ সরকারি প্রণোদনা পাচ্ছে কিন্তু এই প্রণোদনা যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তারা আশা করছেন সরকার আরও বেশি দেবে। এমনকি সরকার সর্বোচ্চ রেমিটেন্স পাঠানো প্রবাসীদের সিআইপি মর্যাদা দেয়।কিন্তু সম্মান ও প্রণোদনা বৃদ্ধি করলেই যে বৈধ পথে দেশে অর্থ পাঠাবে এমন নিশ্চয়তা নেই যদি না তারা সচেতন ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত না হন। প্রবাসী আয় কমার অন্যান্য কারণগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এর পাশাপাশি বৈধ পথে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বাড়ানোর দিকেই জোর তৎপরতা চলছে।
এনবিএল, সিবিএল ও অগ্রণী রেমিট্যান্স হাউসের পক্ষ থেকে সম্প্রতি দেশটিতে নিযুক্ত হাইকমিশনার বরাবর ১০ দফা সম্বলিত একটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয়েছে।বিশ্লেষকরা বলছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে হলে বিদেশে অবৈধ উপায়ে সব ধরনের লেনদেন বন্ধ করতে হবে। সে জন্য প্রয়োজন জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় রেমিট্যান্সের প্রাসঙ্গিকতা ও প্রয়োজনীয়তা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে হুন্ডিসহ প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার পাশাপাশি প্রবাসীদের সচেতনতার ওপর সরকার জোর দিয়েছে। হুন্ডি প্রতিরোধ ও প্রবাসীদের সচেতন করতে কাজ করছে বাংলাদেশ হাইকমিশন।মালয়েশিয়া প্রবাসীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার আহ্বান জানান তিনি।
অফিস : দক্ষিণ বনস্রী, ঢাকা। ই-মেইলঃ bankbimabd@gmail.com, editor.bankbimabd@gmail.com
ফোন: +৮৮০১৭১৮৬২১৫৯১