শ্রেণিকৃত ঋণের মাত্রা, মূলধনের পর্যাপ্ততা, ঋণ-আমানত অনুপাত ও প্রভিশনিং বা নিরাপত্তা সঞ্চিতির পরিমাণ এই চারটি দিক বিবেচনায় নিয়ে ১০টি দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানের বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ১০টি দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। কিন্তু তিনি কোনো ব্যাংকের নাম উল্লেখ করেননি।
তবে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন গনমাধ্যমে ব্যাংকগুলোর নাম প্রকাশ হয়েছে। ব্যাংকগুলোর মধ্যে নয়টি হলো- বাংলাদেশ ন্যাশনাল ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও এবি ব্যাংক। এছাড়াও তালিকায় জনতা ব্যাংকের নাম রয়েছে বলে জানা গেছে। এসব ব্যাংকের শ্রেণিকৃত ঋণের মাত্রা, মূলধনের পর্যাপ্ততা, ঋণ-আমানত অনুপাত ও প্রভিশনিং বা নিরাপত্তা সঞ্চিতির পরিমাণ- এই চারটি দিক বিবেচনায় নিয়ে দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর আগে, মিট দ্য প্রেসে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘আমি দুর্বল ব্যাংকগুলোর নাম বলতে চাই না। আমাদের লক্ষ্য ব্যাংকগুলোকে উন্নতির মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করা।’ তিনি বলেন, ‘দুর্বল ১০টি ব্যাংকের মধ্যে প্রথমটির (ন্যাশনাল ব্যাংক) সঙ্গে আলোচনায় বলেছি, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে।’
আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘একটি ব্যাংক খারাপ হলে অন্যটির ওপর এর প্রভাব পড়ে। আমরা কোনো ব্যাংক বন্ধের পক্ষে না, আমানতকারী যেন তার টাকা ফেরত পান সেটা নিশ্চিত করতে চাই। সব ব্যাংক ব্যবসা করবে, লাভ করবে, বাজারে টিকে থাকবে, এটা আমরা চাই।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ঋণ ব্যবস্থাপনায় ব্যাংকগুলোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নসংক্রান্ত বিষয়ে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ঋণ পুনঃতফসিলীকরণ ও পুনর্গঠন সংক্রান্ত মাস্টার সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এ সার্কুলারে বর্ণিত শর্ত মোতাবেক ব্যাংকগুলো উপরোক্ত বিষয়ে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, যা আগে অনেকটা অস্বচ্ছ এবং অসমভাবে করা হতো।’
ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল ব্যাংকগুলোকে চিহ্নিত করার লক্ষ্যে চারটি চালক যেমন- শ্রেণিকৃত ঋণের মাত্রা, মূলধন পর্যাপ্ততা, ঋণ-আমানত অনুপাত এবং প্রভিশনের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে ১০টি দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চিহ্নিত দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তাদের সমস্যা সমাধানকল্পে বাংলাদেশ ব্যাংক ওয়ান-টু-ওয়ান ভিত্তিতে আলোচনা কার্যক্রম শুরু করছে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো একটি তিন বছর মেয়াদি বিজনেস প্লান প্রদান করবে।যার ক্রমঅগ্রগতি বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পর্যবেক্ষণ করবেন।
অফিস : দক্ষিণ বনস্রী, ঢাকা। ই-মেইলঃ bankbimabd@gmail.com, editor.bankbimabd@gmail.com
ফোন: +৮৮০১৭১৮৬২১৫৯১