আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যর্থ হলে আমানতকারীরা সর্ব্বোচ্চ ২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন

ব্যাংকবীমাবিডি || ২০২২-০২-২১ ০৬:২৬:১৬

image

ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো কারণে ব্যর্থ হলে ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীরা ব্যাংকের গ্রাহকের মতো ক্ষতিপূরণ পাবেন; যার পরিমাণ হবে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা।

এতদিন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে গ্রাহকের কোনো সুরক্ষা ছিল না।

রোববার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত সুরক্ষা বিষয়ক একটি আইনের সংশোধিত খসড়ার অনুমোদন প্রসঙ্গে একথা বলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।  

তিনি বলেন, এতদিন পর্যন্ত ব্যাংকে যে টাকা-পয়সা রাখা হতো তার একটা সুরক্ষা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন লিজিং কোম্পানি বা ফিন্যান্সিয়াল কোম্পানিতে যারা ডিপোজিট করতো তাদের কোনো সেইফটি সিকিউরিটি ছিল।

“সেজন্য পুরোনো আইনটি পরিবর্তন করে ‘ব্যাংক আমানত সুরক্ষা আইন-২০২২’ করা হয়েছে। আগে ছিল ব্যাংক আমানত বিমা আইন, এখন হবে সুরক্ষা আইন। আগে শুধু ব্যাংকের জন্য ছিল, কিন্তু আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ছিল না। ব্যাংকের জায়গায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দ্বারা রিপ্লেস করা হয়েছে।“

নতুন আইন হওয়ার পর এখন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা রেখে অনুমোদন নেওয়া ছাড়া কোনো নামে কেউ সঞ্চয়নের মতো আর্থিক কারবার করতে পারবেন না বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

“এখন থেকে যারাই এ জাতীয় ফিন্যান্সিয়াল ট্রানজেকশন করবে, সেটা যে নামেই হোক তাকে অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংকে রেজিস্ট্রার্ড হতে হবে এবং তার যে টোটাল পেইডআপ ক্যাপিটাল থাকবে সেই ক্যাপিটালের একটা নির্দিষ্ট অংশ বাংলাদেশ ব্যাংক যেভাবে রুল দিয়ে ডিফাইন করে দেবে সে অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা থাকবে।

“সেই ক্ষেত্রে যদি লিজিং কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান উঠে যায় বা কিছু হয় তাহলে গ্রাহকরা সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ওই ডিপোজিট থেকে পাবেন।”

বর্তমানে তালিকাভূক্ত ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও বা সিআরআর ঠিক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থাৎ ব্যাংক গ্রাহকের কাছ থেকে ১০০ টাকার ডিপোজিট বা সঞ্চয় নিলে তাকে বাংলাদেশ ব্যাংকে ৪ টাকা জমা রাখতে হবে। এখন ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সিআরআর কত হবে তা নির্দেশনা জারি করে ঠিক করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

“ব্যাংক ছাড়াও যত ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউট আছে, বিভিন্ন লিজিং কোম্পানি যারা ডিপোজিটের ট্রেডিং করে, তারা সবাই এই আইনের আওতায় আসবে। তারা যে ডিপোজিট নেবে সেজন্য ব্যাংকের মতো তাদেরকেও বাংলাদেশ ব্যাংকে একটা অ্যামাউন্ট সেইফটি হিসাবে জমা রাখতে হবে।“

সচিব বলেন, আগে আইন ছিল শুধু ব্যাংক যখন খোলা হয় তারা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে স্বীকৃতি নেয় এবং ব্যাংকের কাছে কিছু টাকা আমানত রাখে। কিন্তু লিজিং কোম্পানিগুলোর ছিল না। যার ফলে যুবক টাইপের যেসব কোম্পানি রয়েছে তাদের কোনো সেইফটি সিকিউরিটি ছিল না।

সাধারণত ব্যাংকের তুলনায় স্থানীয় পর্যায়ে গড়ে ওঠা সমবায় বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অধিক মুনাফার সুযোগ দিয়ে থাকে। আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিচালনগত ত্রুটিসহ অন্যান্য কারণে এসব প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া হতেও দেখা যায়। বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করে গ্রাহকদের সতর্ক করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

“একটা বিষয় প্রচার করা দরকার, সেটা হচ্ছে ব্যাংক ছাড়া অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বেশি মুনাফা পাওয়ার আশায় টাকা জমা রাখলে সেটা যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে সরকার মাত্র দুই লাখ টাকার দায়িত্ব নিচ্ছে। বাকিটা যদি ওদের কাছ থেকে রিকভার করা যায় তাহলে যাবে। কিন্তু সরকার মাত্র দুই লাখ টাকার দায়িত্ব নিচ্ছে,” বলেন তিনি।

আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ bankbimabd এ লাইক দিন

অফিস : দক্ষিণ বনস্রী, ঢাকা। ই-মেইলঃ bankbimabd@gmail.com, editor.bankbimabd@gmail.com

ফোন: +৮৮০১৭১৮৬২১৫৯১