বরাবরের ম তোই এবারো দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচালন মুনাফা করেছে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটি গত বছর শেষে ২ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে।
ব্যাংকাররা বলছেন, ঋণ পরিশোধে নীতি ছাড়ের কারণে অনেক ব্যাংকেরই আদায় কমেছে। কিছু ব্যাংক কৌশলে অনাদায়ী সুদও আয়ের খাতে নিয়ে আসায় পরিচালন মুনাফা বেশি দেখাচ্ছে। পরিচালন ব্যয় কমানোর পাশাপাশি আমানতের সুদহার সর্বনিম্নে নামিয়ে আনার সুফলও পেয়েছে ব্যাংকগুলো। আমদানি, রফতানি, রেমিট্যান্সের কমিশন থেকে প্রাপ্ত আয় ও পুঁজিবাজার থেকে পাওয়া মুনাফার প্রভাব বেশির ভাগ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফায় প্রতিফলিত হয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে ব্যাংকের পরিচালন মুনাফায় উল্লম্ফন হলেও দীর্ঘমেয়াদে দেশের ব্যাংক খাতের ঝুঁকি প্রতিনিয়ত বাড়ছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
নীচে কয়েকটি ব্যাংকের ডিসেম্বর ৩১, ২০২১ তারিখের পরিচালন মুনাফা দেখানো হলোঃ
*সময়ে সময়ে ব্যাংকগুলোর মুনাফা আপডেট করা হবে।
আয় থেকে ব্যয় বাদ দিয়ে যে মুনাফা থাকে, সেটিই কোনো ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা। পরিচালন মুনাফা কোনো ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা নয়। এ মুনাফা থেকে খেলাপি ঋণ ও অন্যান্য সম্পদের বিপরীতে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) সংরক্ষণ এবং সরকারকে কর পরিশোধ করতে হয়। প্রভিশন ও কর-পরবর্তী এ মুনাফাই হলো একটি ব্যাংকের প্রকৃত বা নিট মুনাফা। বছর শেষে ব্যাংকারদের দেয়া ইনসেনটিভ বোনাসও কিছু ব্যাংক পরিচালন মুনাফার মধ্যে হিসাবায়ন করে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার ব্যাংকগুলো যে পরিচালন মুনাফা করেছে, সেটি প্রকৃত মুনাফা নয়। অনেক ব্যাংক অনাদায়ী সুদও আয়ের খাতে দেখানোয় পরিচালন মুনাফা কিছুটা বেশী দেখাচ্ছে। ঋণের কিস্তি পরিশোধে বাধ্যবাধকতা থেকে বছরব্যাপী ছাড় পেয়েছেন গ্রাহকরা। এটিকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও গ্রাহকদের বড় অংশই ঋণ পরিশোধ করেনি। নতুন বছরে খেলাপি ঋণের সময় গণনা শুরু হলে ব্যাংক খাত মন্দ ঋণের ভারে বিধ্বস্ত হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ২০২১ সালের মধ্যে যেকোনো ঋণগ্রহীতা প্রদেয় কিস্তির ১৫ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করলেই খেলাপি হওয়া থেকে নিষ্কৃতি পাবেন। যদিও এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছিল, চলতি বছরে সিএসএমই খাত ছাড়া অন্য সব খাতের ঋণগ্রহীতাদের প্রদেয় কিস্তির ন্যূনতম ২৫ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করতে হবে। ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণের বিপরীতে এর আগের নির্দেশনা অনুযায়ী ২ শতাংশ অতিরিক্ত সাধারণ সঞ্চিতি বা প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।
অন্যদিকে, ১৫ শতাংশ পরিশোধ করলে খেলাপি হবে না—এই সুবিধা সিএমএসএমই খাতও। তবে এ ক্ষেত্রে দেড় শতাংশ অতিরিক্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে হবে।
অফিস : দক্ষিণ বনস্রী, ঢাকা। ই-মেইলঃ bankbimabd@gmail.com, editor.bankbimabd@gmail.com
ফোন: +৮৮০১৭১৮৬২১৫৯১