পুঁজিবাজারে বিশেষ তহবিল বিনিয়োগে অনিয়মের দায়ে তিন ধাপে ২৫ ব্যাংককে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত আগস্ট থেকে চলতি মাস পর্যন্ত ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করা হয়। প্রথম দফায় ১২টি, দ্বিতীয় দফায় ১৮টি এবং সর্বশেষ তৃতীয় দফায় পাঁচটি ব্যাংককে সতর্ক করা হয়। একই সাথে ব্যাংকগুলোতে এ নিয়ে তদারকি জোরদার করা হয়। নিয়মিত তদারকির আওতায় ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের চিত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের ।
জানা গেছে, বড় ধরনের দর পতনের জের ধরে পুঁজিবাজারে টাকার প্রবাহ বাড়াতে ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দেয়া হয়। এতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংক ছয় হাজার ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের সুযোগ পায়। এ তহবিল বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রচলিত নীতিমালা থেকে কিছু ছাড় দেয়া হয়। প্রভিশন সংরক্ষণের ছাড়সহ এ তহবিল থেকে পুঁজিবাজারে যে পরিমাণ বিনিয়োগ করা হবে ওই বিনিয়োগ বাংলাদেশ ব্যাংকের সব ধরনের বিধিনিষেধের আওতামুক্ত থাকবে। একই সাথে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগসীমাও আওতামুক্ত রাখা হয়। পরে সুকুক বন্ডে এই তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয় এবং তহবিলের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৮ সাল পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে নীতিমালা জারির প্রায় দুই বছর অতিবাহিত হতে চললেও এখনো কিছু কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক কাক্সিক্ষত হারে তহবিল গঠন করতে পারেনি। সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, এ পর্যন্ত ৩১ বাণিজ্যিক ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য চার হাজার ৩০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে। তবে সেই তহবিলের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ ব্যবহার করেছে। দুই-তৃতীয়াংশ এখনো বিনিয়োগ করেনি।
এক দিকে কিছু ব্যাংক কাক্সিক্ষত হারে তহবিল গঠন করেনি, অন্য দিকে গঠিত তহবিল থেকে কাক্সিক্ষত হারে বিনিয়োগ করেনি, আবার কিছু ব্যাংক নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিনিয়োগ করেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে তদারকি বাড়ানো হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গত আগস্ট থেকে চলতি মাস পর্যন্ত তিন ধাপে ২৫ ব্যাংককে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নিয়মিত তদারকির আওতায় ব্যাংকগুলোতে পরিদর্শন করা হচ্ছে। যেসব ব্যাংকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অনিয়ম পাওয়া যাচ্ছে ওই ব্যাংককে সতর্ক করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত তিন ধাপে ২৫ ব্যাংককে সতর্ক করা হয়েছে।
এ দিকে বিশেষ তহবিল থেকে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগযোগ্য উপাদান বাড়ানোর মাধ্যমে বিনিয়োগে বৈচিত্র্য আনার উদ্দেশ্যে তথা ঝুঁকি কমাতে আগের দেয়া নির্দেশনার অতিরিক্ত কিছু বিষয় সংযোজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ২০০ কোটি টাকার তহবিলের সম্পূর্ণ অংশ (লভ্যতা অনুসারে) ন্যূনতম ৭০ শতাংশ সৌর বিদ্যুৎ, বায়ুশক্তি চালিত বিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ, বায়োগ্যাস ইত্যাদি নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বেসরকারি উদ্যোক্তার ইস্যুকৃত তালিকাভুক্ত বা সাবস্ক্রিপশন ক্লোজিংয়ের তারিখ থেকে ১ বছরের মধ্যে তালিকাভুক্ত হবে এরূপ ১০০ শতাংশ অ্যাসেট ব্যাকড গ্রিন সুকুকে বিনিয়োগ করা যাবে।
অফিস : দক্ষিণ বনস্রী, ঢাকা। ই-মেইলঃ bankbimabd@gmail.com, editor.bankbimabd@gmail.com
ফোন: +৮৮০১৭১৮৬২১৫৯১