সাংলা
হিমাচলের অসামান্য সুন্দর পাহাড়ে ঘেরা উপত্যকা। কিন্নর জেলার এই উপত্যকাকে অনেকে বসপা বলেন। কিন্তু, পর্যটকদের কাছে সাংলা নামেই পরিচিত। রুক্ষ পাহাড়ের গায়ে ঝুলে থাকা পাথর আর তারই বুক চিরে চলে গিয়েছে ভয়ঙ্কর সুন্দর রাস্তা। ডান দিকে বয়ে চলেছে বসপা নদী। এই পথের শেষে নীল আকাশের নীচে তুষারশুভ্র পাহাড়ের কোলে সাংলা উপত্যকার বিস্তার। সারাদিন বরফে মোড়া শৃঙ্গে অবিরাম রংবদলের খেলা চলে। ৮৭০০ ফুট উচ্চতায় সাংলা শীতে বরফের চাদরে মুড়ে থাকে।
আবার জুলাই-অগস্টে গ্রামের প্রতিটি বাড়ির বাগানে লাল আপেল আর গোল্ডেন আপেলের বাহার। সাংলার প্রায় এক কিমি উপরেই বুশাহার রাজাদের প্রাচীন দুর্গ কামরু। মাঝে পড়বে কামরু মনাস্টি। এর পর কামরু দুর্গ। তবে দুর্গের অন্দরমহলে সাধারণের প্রবেশাধিকার নেই। এখানে দেবী কামাখ্যার মন্দির দেখে নিন। মন্দিরে চামড়ার জিনিস, মোবাইল নিয়ে প্রবেশ নিষেধ। এখান থেকে চারপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী আর সাংলা উপত্যকাকে দেখতে অসাধারণ লাগে। বসপা নদীর ধারে রেনবো ও ব্রাউন ট্রাউট ফিশিং-এর খ্যাতি আছে।
আজাদ কাশ্মীর
কিন্নরে কাশ্মীর? তা-ও আজাদ কাশ্মীর! হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। বসপা নদীকে সঙ্গী করে চলে আসুন তিন কিমি দূরে। গাড়ির রাস্তা শেষ। সামান্য হেঁটেই খানিক নীচের দিকে নামলেই বসপা নদীর এক বহতা দেখা দেবে। ছোট্ট সাঁকো পেরিয়ে চলে আসুন। স্বাগত জানাবে পাইনের সারি। এটাই আজাদ কাশ্মীর গ্রাম। ছোট ছোট গ্রামের বাড়িঘর। প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় রয়েছে আপেলের গাছ। দূরের সাংলাকে এখান থেকে অসাধারণ লাগে। আসলে রাস্তা তৈরির কাজের খোঁজে একদল শ্রমিক এসেছিলেন সাংলায়। তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের একটা দূরত্ব তৈরি হয়। ফলে তাঁরা বসপা নদীর এ পারে এসে বসবাস শুরু করেন। তাঁরা এই জায়গার নাম রাখেন আজাদ কাশ্মীর। সাংলার অল্পচেনা আজাদ কাশ্মীর অবশ্যই দেখে নেবেন। সাংলার ট্রাউট মাছের বেশ সুনাম আছে। আজাদ কাশ্মীর গ্রাম পেরিয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় বসপার জলে পুষ্ট, তাজা রেনবো ট্রাউট কিনে নিতে পারেন।
ছিটকুল
সাংলা থেকে বসপা নদীর পাকদণ্ডী বেয়ে চলে আসা যায় । পথের দু’পাশে অফুরান সৌন্দর্যের ভাণ্ডার। মাঝে পড়বে ছোট্ট এক জনপদ। রকছাম। পাহাড়, নদী আর নীল আকাশের উদারতা। পাইন, দেওদার তো আছেই। খুব কাছেই নিষিদ্ধ দেশ চিন অধিকৃত তিব্বত সীমান্ত। এক বেগবান সুন্দরী নদী বয়ে এসেছে। বসপা। এ নদী বয়ে এসেছে সুদূর তিব্বত ছুঁয়ে। নদীর ধার ঘেঁষে সবুজ ঘাসে ছেয়ে থাকে রংবেরঙের ছোট্ট ছোট্ট ফুল। যেন ঈশ্বরের সাজানো উপত্যকা। শীতে গোটা উপত্যকা বরফের চাদরে ঢেকে থাকে। ঠিক যেন বরফের বাগান।
কল্পা
সাংলা থেকে এ বারের গন্তব্য হিমাচলের আরও এক কল্পলোক— কল্পা। এখানে এলে মনে হবে, প্রকৃতি তার আপন খেয়ালে প্রতি মুহূর্তে ছবি এঁকে চলেছে কল্পার ক্যানভাসে। পবিত্র কিন্নর-কৈলাস পর্বতমালার ঘেরাটোপে অতীতের ‘চিনি’, আজকের কল্পা।
অফিস : দক্ষিণ বনস্রী, ঢাকা। ই-মেইলঃ bankbimabd@gmail.com, editor.bankbimabd@gmail.com
ফোন: +৮৮০১৭১৮৬২১৫৯১