ঢাকা ব্যাংকের বাংশাল শাখার টাকা আত্মসাত করতে ব্যাংকটির দুই কর্মকর্তা বেছে নিয়েছিলেন অভিনব উপায়| ভল্টে থাকা ১০০ টাকার নোটের বান্ডেলের দুইপাশে ৫০০ টাকার নোট বসিয়ে তাকে ৫০০ টাকার নোটের বান্ডেল হিসেবে দেখানো হতো। এরপর সেগুলো স্তুপ করে রাখা হতো, যাতে প্রাথমিকভাবে দেখে মনে হয় এটি ৫০০ টাকার বান্ডেলের স্তুপ। একইভাবে ৫০০ টাকার নোটের বান্ডেলের দুই পাশে এক হাজার নোট দিয়ে এক হাজার টাকার বান্ডেল সদৃশ তৈরি করে স্তুপ করে রাখা হতো। তবে প্রতারণার এই কৌশল শেষ পর্যন্ত ব্যাংকটির অভ্যন্তরীণ অডিটে ধরা পড়ে যায়।
ঢাকা ব্যাংকের বংশাল শাখার ভল্ট থেকে তিন কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ব্যাংকটির দুই কর্মকর্তাকে আসামী করে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ শনিবার দুদকের সহকারী পরিচালক আতিকুল আলম বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে ব্যাংকের বংশাল শাখার ক্যাশ-ইনচার্জ রিফাতুল হক ও ম্যানেজার (অপারেশন) এমরান আহম্মেদকে। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ঢাকা ব্যাংকের তিন কোটি ৭৭ লাখ টাকা আত্মাসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই দুই কর্মকর্তাকে পুলিশে দেয়। দুদকের তফসিলভুক্ত হওয়ায় মামলাটি তারাই দায়ের করেছে।
দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামি রিফাতুল হক ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে বংশাল শাখায় সিনিয়র অফিসার (ক্যাশ ইনচার্জ) হিসেবে কর্মরত আছেন। ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ইন্টারনাল অডিটের অংশ হিসেবে গত ১৭ জুন ব্যাংকের বংশাল শাখা পরিদর্শন করা হয়। তাদের তদন্তে তাৎক্ষণিক হিসাবে তিন কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ঘাটতি পাওয়া যায়।
ঘাটতি থাকার বিষয়ে ক্যাশ ইনচার্জ রিফাতুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি জানান, লোভের বশবর্তী হয়ে ২০২০ সালের ২০ জুন থেকে চলতি বছরের ১৬ই জুন পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে অল্প অল্প করে টাকা সরিয়েছেন। প্রাথমিত তদন্তেই ধরা পড়ে টাকার বান্ডেল তৈরিতে অভিনব প্রতারণার বিষয়টি।
ব্যাংক শাখার ভল্টের চাবি ম্যানেজার (অপারেশন) এমরান আহমেদের কাছেও রক্ষিত থাকে। এজাহারে বলা হয়, নিয়মানুযায়ী এমরান আহমেদের প্রতিদিন ক্যাশ হিসাব সংরক্ষণ ও বুঝে নেয়ার কথা থাকলেও তিনি তা না করে অপর আসামি রিফাতুল হকের সঙ্গে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারণা ও অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে ব্যাংকের ভল্টের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
অফিস : দক্ষিণ বনস্রী, ঢাকা। ই-মেইলঃ bankbimabd@gmail.com, editor.bankbimabd@gmail.com
ফোন: +৮৮০১৭১৮৬২১৫৯১