দ্রুত প্রসার হচ্ছে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা। বাড়তি ঝামেলা ছাড়াই বাড়ির পাশে পরিচিতজনের খোলা আউটলেট থেকে সেবা নিতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন অনেকে। আগে কখনও ব্যাংকে যেতেন না- এমন ব্যক্তিরা সঞ্চয় বা বিভিন্ন ব্যাংকিং সেবা নিচ্ছেন এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। গত মার্চ পর্যন্ত এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর আমানত বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের মার্চ শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানতের পরিমাণ ছিল আট হাজার ৩৩০ কোটি টাকা। দু'বছর আগের মার্চ শেষে ছিল তিন হাজার ৬৩২ কোটি টাকা। আর এ বছরের মার্চে ১৭ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা হয়েছে। দু'বছরে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানতের পরিমাণ বেড়ে প্রায় পাঁচ গুণ হয়েছে। আমানত ব্যাপকভাবে বাড়লেও নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে ঋণ বিতরণ বাড়ছে কিছুটা ধীরগতিতে। গত মার্চে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ২৮৬ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। গত বছরের মার্চে বিতরণের পরিমাণ ছিল ৫৭ কোটি টাকা। তার আগের বছর ১৪ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়। এদিকে সারাদেশের আউটলেটগুলো গত মার্চে ১২০ কোটি টাকার ইউলিটি বিল কালেকশন করেছে। এক হাজার ৬২৯ কোটি টাকার প্রবাসী রেমিট্যান্স সুবিধাভোগীর হাতে পৌঁছে দিয়েছে।
ব্যাংকিং সেবা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে কম খরচে সেবার আওতায় আনতে ২০১৩ সালে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালুর অনুমতি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এজেন্ট ব্যাংকিং বা প্রতিনিধি ব্যাংকিং হলো সরাসরি ব্যাংকের শাখা না খুলে ব্যাংকের এজেন্ট হয়ে কাজ করা। সাধারণত যে কোনো ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স আছে- এমন ব্যক্তি এজেন্টশিপ নিতে পারেন। যে পরিমাণ টাকা তিনি ব্যাংকের অনুকূলে জমা রাখেন ওই পরিমাণ লেনদেন করতে পারেন। ব্যবসার সুবিধার জন্য একজন এজেন্টের একাধিক আউটলেট নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আউটলেটে গিয়ে গ্রাহকরা আমানত রাখা, অর্থ উত্তোলন ও ক্ষুদ্রঋণ নিতে পারেন। এসব আউটলেট থেকে প্রবাসী রেমিট্যান্স বিতরণ, ইউটিলিটি বিল, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় ভাতাভোগীকে অর্থ প্রদান, অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স জানা, অ্যাকাউন্ট খোলার ফরম সংগ্রহ, ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডের আবেদন ফরম এবং চেক বই সংগ্রহ করতে পারেন গ্রাহকরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ পর্যন্ত মোট এজেন্ট রয়েছেন ১২ হাজার ২৭০ জন। এসব এজেন্টের আউটলেট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৪২০টি। যেখান থেকে একশ কোটি ১০ লাখের বেশি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ৬০ লাখের বেশি অ্যাকাউন্ট রয়েছে পুরুষদের। আর নারীদের রয়েছে ৪৬ লাখ ৫১ হাজারের বেশি অ্যাকাউন্ট। অন্যদের অ্যাকাউন্ট রয়েছে তিন লাখ ৫৭ হাজার। গত বছরের মার্চ শেষে ১১ হাজার ৯৮৩ আউটলেটের মাধ্যমে অ্যাকাউন্টের পরিমাণ ছিল প্রায় ৬৫ লাখ। এর মানে, অ্যাকাউন্টের সংখ্যাও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
ব্যাংকাররা জানান, আশপাশে ব্যাংকের শাখা নেই- এমন এলাকায় বেশিরভাগ এজেন্ট আউটলেটের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। পরিচিতজনের মাধ্যমে আউটলেট খোলায় গ্রাহকদের ব্যাংকিং ভীতিও কম থাকে। এতে করে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের দ্রুত প্রসার হচ্ছে।
অফিস : দক্ষিণ বনস্রী, ঢাকা। ই-মেইলঃ bankbimabd@gmail.com, editor.bankbimabd@gmail.com
ফোন: +৮৮০১৭১৮৬২১৫৯১